ফাইল ছবি

শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করতে দেশের সব শ্রমিকের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার দাবি জানিয়েছে কর্মজীবী নারীরা।

সোমবার (১ মে) রাজধানীর পল্টনে মহান মে দিবস ২০২৩ ও কর্মজীবী নারীর ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। ‘সকল ক্ষেত্রে অধিকার মর্যাদায় নারী থাকবে পৃথিবীর বৃহৎ আঙিনায় এবং সকল শ্রমিকের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা কর’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সমাবেশটি হয়।

কর্মজীবী নারীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিরীন আখতারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল, কর্মজীবী নারীর অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানা এবং নারীশ্রমিক কণ্ঠ থেকে সংহতি বক্তব্য রাখেন নারীশ্রমিক নেত্রী মুর্শিদা আখতার নাহার, মাকসুদা খাতুন, হেনা চৌধুরী প্রমুখ।

বক্তব্যে কর্মজীবী নারীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিরীন আখতার বলেন, নারী ও নারীশ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে কর্মজীবী নারী পথ চলা শুরু করেছিল আজ থেকে ৩৩ বছর আগে। মানুষকে বেঁচে থাকার জন্য কাজ করতে হয়। তাই আমরা আবারও বলছি কাজ চাই, তবে তা মর্যাদার সঙ্গে। মর্যাদার পাশাপাশি বেঁচে থাকার জন্য মজুরিও গুরুত্বপূর্ণ। সব শ্রমিকের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করতে হবে। নারীশ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা, ঝুঁকিমুক্ত কর্মপরিবেশ এবং যৌন হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে রাষ্ট্র অনেক নীতিমালা করেছে। সেই নীতিমালার আলোকে আইন প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন করতে হবে।

সমাবেশে বলা হয়, এ বছর কর্মজীবী নারীর গৌরবোজ্জ্বল ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক খাতের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এই অগ্রগতিতে নারীর অবদান সর্বাধিক বিশেষ করে কৃষি, শ্রম, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে নারীর অবদান উল্লেখযোগ্য। ‘কর্মজীবী নারী’ নারী আন্দোলন ও শ্রমিক আন্দোলনে নারীশ্রমিকের ব্যাপকতর উপস্থিতি, কার্যকর অংশগ্রহণ ও তৃণমূল পর্যায়ে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিরন্তর সংগ্রামে এগিয়ে চলছে সাফল্যের সঙ্গে। মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক উন্নয়নে এবং তৈরি পোশাক খাত, চামড়া শিল্প খাতসহ কৃষিশ্রমিক, অভিবাসীশ্রমিক, পরিচ্ছন্নশ্রমিক, গৃহশ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে ‘কর্মজীবী নারী’ ধারাবাহিকভাবে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মহান মে দিবস ২০২৩ এবং কর্মজীবী নারী’র ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শ্রমজীবী-খেটে খাওয়া-মেহনতি শ্রমিকদের জন্য কর্মজীবী নারীর দাবি–

১. শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে;
২. শ্রমিক ছাঁটাই, কলকারখানা বন্ধ করা চলবে না;
৩. অতি জরুরি কাজে নিয়োজিত সব শ্রমিকের জন্য কার্যকর পিপিই-এর ব্যবস্থা করতে হবে;
৪. সব শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে;
৫. শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করতে হবে;
৬. আইএলও কনভেনশন ১৯০ এর বাস্তবায়ন করতে হবে। শোভন কাজ নিশ্চিত করতে হবে;
৭. গৃহশ্রমিক সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা-২০১৫ বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এর আলোকে আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৮. ঘরে-বাইরে-কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধ করতে রুখে দাঁড়াতে হবে।

এসআই/এসএসএইচ/