থানায় ঢুকে প্রতিপক্ষকে ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে মারধর
চট্টগ্রাম নগরের সদরঘাট থানা এলাকায় ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। একপর্যায়ে একটি পক্ষ থানায় অভিযোগ করতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন সেখানে ঢুকে তাদের মারধর করে। রোববার (৭ মে) দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।
পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে কায়সার গ্রুপ ও নাহিদ গ্রুপ নামে দুটি পক্ষ সক্রিয় রয়েছে। রোববার কায়সার গ্রুপের অনুসারী আবুল হাসান (২০) নামে এক ছাত্র পার্শ্ববর্তী জনতা ব্যাংকে অনার্সে ভর্তির টাকা জমা দিতে যান। এ সময় তাকে নাহিদ গ্রুপের অনুসারী হাসান মুরাদসহ কয়েকজনে মিলে মারধর করেন।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী হাসান সদরঘাট থানায় অভিযোগ দেন। পরবর্তীতে অভিযোগটিকে জিডি হিসেবে রেকর্ড করার জন্য নির্দেশনা দেন থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা। তবে ওই সময় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় অনলাইনে জিডি রেকর্ড হয়নি। এরপর কলেজে ফিরে যান ভুক্তভোগী আবুল হাসান।
দুপুর পৌনে ২টার দিকে জিডির কপি সংগ্রহের জন্য আবুল হাসান পুনরায় সদরঘাট থানায় যান। এ সময় মারধরকারী হাসান মুরাদ থানার গেটে অবস্থান করছিলেন। দুজনের দেখা হলে হাসান মুরাদকে ডেকে থানায় নিয়ে যায় আবুল হাসান। খবর পেয়ে মহানগর ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আবু তারেক রনি দলবল নিয়ে থানায় ঢুকেন। ভেতরেই আবুল হাসান ও কলেজ ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক সাফাত বিন আলমকে মারধর করেন। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশের কেউ এগিয়ে আসেননি বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। পরবর্তীতে উল্টো ভুক্তভোগীদের থানায় আটক করা হয়। কিছুক্ষণ পর অভিভাবকের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সাফাত বিন আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আবু তারেক রনির ছাত্রত্ব নেই। আধিপত্য বিস্তার করতে তিনি বারবার কলেজের ছাত্রদের নানা ইস্যুতে মারধর করেন। রোববার আবুল হাসানকে ভর্তির টাকা জমা দিতে গেলে এক দফা মারধর করা হয়। পরবর্তীতে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ভেতরে পুলিশের সামনে আমাকেও মারধর করে। এ ঘটনায় ওসি প্রথমে জিডি নেবেন বলেছেন। পরবর্তীতে তিনি জিডিও নেননি। একপর্যায়ে তিনি হামলাকারীদের পক্ষ নিয়ে আমাদের তিনজনকে আটক করেন। ঘণ্টাখানেক আটকে রেখে আমাদের ছেড়ে দেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মহানগর ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আবু তারেক রনিকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
সদরঘাট থানার ওসি গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সমস্যা হয়েছিল। থানায় এসেও তারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। তবে পরবর্তীতে তারা বিষয়টি নিজেরা মিটমাট করে ফেলে। এজন্য মামলা হয়নি। তবে থানায় দুই পক্ষ থেকে অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ঝামেলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। প্রথমে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হলেও পরবর্তীতে অভিভাবকের জিম্মায় কিছুক্ষণ পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এমআর/এসকেডি