দেশে দ্বিতীয়বারের মতো ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড সংক্রান্ত দুর্যোগ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং এ সংক্রান্ত প্রস্তুতিতে উৎসাহিত করতে সুপার-সমকাল আর্থকোয়েক অ্যান্ড ফায়ার প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা করা হয়েছে। 

এবার দুটি ক্যাটাগরিতে তিনটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান ও তিনজন সাংবাদিককে সমকাল ও সুপার প্রকল্পের পক্ষ থেকে এ পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করা হবে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সমকাল কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যক্রম চলতি বছরের প্রতিযোগিতার আওতাভুক্ত। একটি জুরি বোর্ডের মাধ্যমে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নির্বাচিত করা হবে। উভয় ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান পাবে ৫০ হাজার টাকা করে পুরস্কার। এ ছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরার জন্য রয়েছে যথাক্রমে ৩৫ হাজার টাকা ও ২৫ হাজার টাকা করে পুরস্কার। 

পুরস্কারের জন্য আবেদনপত্র সমকালের কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করা যাবে। অথবা এই লিংক থেকে ডাউনলোড করা যাবে। আবেদনপত্র সমকালের কার্যালয়ে (৩৮৭, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা ১২০৮) জমা দিতে হবে অথবা events.samakal@gmail.com ঠিকানায়ও জমা দেয়া যাবে। 

সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক থাকলেও সচেতনতা নেই। মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে উদ্যোগী করতে এ পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়েছে। এতে একদিকে সাংবাদিকদের লেখালেখিতে অনুপ্রেরণা পাবেন, অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানগুলোও ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ডের সতর্কতা হিসেবে নানা উদ্যোগ নেবে। 

তিনি বলেন, সরকার, উন্নয়ন সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজকটি করতে চাই। এ বিষয়ে আমরা জাগরণ তৈরি করতে চাই। মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে চাই। সমন্বিত আন্দোলনের মাধ্যমে জাতিকে জাগাতে চাই। বাড়াতে চাই সচেতনতা। আমরা হাতে হাত মিলিয়ে সবাই এগিয়ে যেতে চাই। কারণ ঢাকাসহ সবগুলো শহর ইটের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। এটাকে বাসযোগ্য করা করা দরকার। আমরা পরিকল্পিত  শিল্পায়নের পাশপাশি পরিকল্পিত নগরায়ণ চাই। যাতে মানুষের জীবনের ঝুঁকি কমে। যাতে আগুন আর ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগে কাউকে প্রাণ হারাতে না হয়। এ পুরস্কারে আরও ক্যাটাগরি বাড়ানোর চিন্তা আছে বলেও জানান আবু সাঈদ খান। 

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, স্ট্রেংদেনিং আরবান পাবলিক প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স (সুপার) প্রকল্প একটি কনসোর্টিয়াম প্রকল্প। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইডের (ইকো) আর্থিক সহযোগিতায় সুপার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের পরিচালক (হিউম্যানিটেরিয়ান ইমার্জেন্সি অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ এডাপটেশন) দোলন যোশেফ গোমেজ বলেন, দুর্যোগে প্রস্তুতি ও সাড়াদানে অনেকে সংস্থা কাজ করে। সেখানে গণমাধ্যম জনগণকে সচেতন করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। ফলে আমরা তাদের স্বীকৃতি দিতে এ পুরস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রাইভেট সেক্টরের বড় ভূমিকা আছে। নগরে অগ্নিকাণ্ড ও ভূমিকম্প মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি অর্থনীতির ভিত্তি প্রাইভেট সেক্টরকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করছি। ফলে এসব প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানেও আমরা পুরস্কার দেব। এ উদ্যোগ চালু রাখার চেষ্টা করবো। আমরা চাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা হবে সমন্বিত উদ্যোগ।

অনুষ্ঠানে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের কমিউনিকেশন ম্যানেজার (মিডিয়া রিলেশন্স) দেবাশিষ রঞ্জন সরকার, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির যুগ্ম নির্বাহী সচিব খন্দকার আনোয়ার কামাল, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সুপার কনসোর্টিয়াম প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রলয় ব্যানার্জি, ইউনাইটেড পারপাসের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট ম্যানেজার ঈশিতা আমিন, সমকালের হেড অব ইভেন্টস হাসান জাকির এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও প্রাইভেট সেক্টরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।