রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকার সাত মসজিদ সড়ক বিভাজকের গাছ কাটা বন্ধ করে সেখানে নতুন করে গাছ রোপণের দাবি জানিয়েছে সাতমসজিদ সড়ক গাছ রক্ষা আন্দোলন কমিটি। সোমবার (৮ মে) প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

আন্দোলনের সমন্বয়কারী আমীরুল রাজীব বলেন, সাত মসজিদ সড়কে আগ্রাসী প্রজাতির গাছ খুব একটা নেই। গাছগুলো কোনোভাবেই সড়ক ও নাগরিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয়। গাছগুলো রেখেই সড়ক সম্প্রসারণ করা সম্ভব ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। রাতের আঁধারে গাছগুলো কাটা হয়েছে। সড়ক সম্প্রাসারণের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারদের কাছে গাছ কাটার অনুমতিপত্র দেখতে চাইলে সঠিক অনুমোদনপত্র দেখাতে পারেননি।

তিনি বলেন, তারা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দেওয়া কেবলমাত্র কাজ শুরুর একটি নির্দেশপত্র দেখান যেখানে কোথাও গাছ কাটার নির্দেশনা নেই।বলা যেতে পারে, অবৈধভাবেই গাছগুলো কাটা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের ভাষ্য, গাছগুলো সড়কদ্বীপের জন্য বেমানান ও ঝুঁকিপূর্ণ।তাহলে এই সড়কে যদি ভুল করে গাছ লাগানো হয়ে থাকে, সে ভুল করা কর্মকর্তাকে খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সে রাস্তায় সর্বসাকুল্যে ৩০টি গাছ রয়েছে। সাতমসজিদ সড়কের ঐতিহ্য হিসেবে এই গাছগুলো রক্ষায় আমরা কাজ করছি। রাতে সবাই মিলে পাহারা দিচ্ছি। আমাদের দাবি একটাই, এই সড়কের গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। আবার নতুন করে গাছ রোপণ করতে হবে।

আমীরুল রাজীবের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাপা সভাপতি সুলতানা কামাল, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, লেখক পাভেল পার্থ, নগরবিদ আমিন মোহাম্মদ খান, বেলার বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হক প্রমুখ।

তাদের দাবিগুলো হলো

>> সাত মসজিদ সড়কদ্বীপে গাছ কাটা অবিলম্বে বন্ধ করা এবং কেটে ফেলা গাছগুলোকে স্থানীয় প্রজাতি দ্বারা প্রতিস্থাপন করা।

>> গাছ রোপণ করে তা আবার কেটে ফেলার রেওয়াজ বন্ধ করতে হবে।

>> নগরে বনায়ন, গাছ রক্ষা ও কাটার প্রয়োজনে সুনির্দিষ্ট বিধিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

>> সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যেকোনো প্রকল্প গ্রহণে পরিকল্পনা প্রতিবেদন তৈরি, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট এবং সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনার শাখার যথাযথ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

>> পার্ক, উদ্যান, সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের উন্নয়ন পরিকল্পনার নকশা জনগণের কাছে উপস্থাপন করে এলাকাবাসীসহ পেশাজীবী, পরিকল্পনাবিদ, পরিবেশবিদসহ, উদ্যানতত্ত্ববিদদের যথাযথ মতামত গ্রহণ সাপেক্ষে পরিকল্পনা চূড়ান্তকরণ এবং বাস্তবায়ন করতে হবে।

>> বিদ্যমান গাছ ও সবুজকে অক্ষুণ্ণ রেখে উন্নয়ন প্রকল্প পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

>> নগর এলাকায় গাছ কাটার বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর আর বন অধিদপ্তরের যথাযথ ভূমিকা প্রতিপালনের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

>> নগর উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রকৃতিভিত্তিক পরিকল্পনাকে প্রাধান্য দিতে হবে।

ওএফএ/ওএফ