বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা উন্নত করার প্রক্রিয়ায় প্রিপেইড মিটার উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও প্রশিক্ষণ খাতের প্রায় সাড়ে ৩৬ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানের এ বিষয়ে সুর্নিদিষ্ঠ তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় বাংলাদেশ ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। খুব শিগগিরই খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে মামলাটি দায়ের করা হবে।

মঙ্গলবার (৯ মে) এ বিষয়ে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) মো. মোজাম্মেল হক খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বিরুদ্ধে কেনাকাটা ও প্রশিক্ষণ খাতের অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে এমন অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করা হয়। আমরা বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেছি। অনুসন্ধান শেষে কমিশন মামলা দায়ের করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে।

তিনি বলেন, মামলায় যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে, তার প্রমাণ পেলে সঠিক বিচার হবে। শুধুমাত্র বিদ্যুৎ খাত নয় মানুষের স্বার্থ জড়িত এমন সব খাতেই দুদকের নজরদারি রয়েছে।

অনুমোদিত মামলার আসামিরা হলেন- ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিক উদ্দিন, বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেক্ট্রিক্যাল কোম্পানির (বিএসইসিও) সাবেক পরিচালক (অর্থ) আব্দুল মোতালেব এবং বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেক্ট্রিক্যাল কোম্পানির সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মি. ইয়ে ওয়েনজুন।

অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা উন্নত করার জন্য দেশীয় ব্যবস্থাপনায় প্রিপেইড মিটার উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সরকারি মালিকানাধীন ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) ও চীনের হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি হিসেবে খুলনায় ‘বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেক্ট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসইসিও)’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। যার উদ্দেশ্য ছিল বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার সংযোজন, উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ করা। তবে প্রিপেইড মিটার উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ায় প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন খাতে বরাদ্দকৃত টাকা লুটপাট হয়।

সূত্র আরও জানায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে এলসি করে হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি কোনো প্রশিক্ষণ না দিয়ে ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৮ টাকা, রিপেয়ার ট্রেনিং বাবদ ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৬৭০ টাকা, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল সাপোর্ট সার্ভিস খাতের ৫ কোটি ৫২ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা, তিন বছরের ওয়ারেস্টি মিটারের জন্য বরাদ্দকৃত ৭ কোটি ২১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৮  টাকা এবং প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনিক্যাল সাপোর্ট সার্ভিসের ১ কোটি ২৯ লাখ ৯৭ হাজার ৩৫০ টাকাসহ বিভিন্ন খাতের ৩৬ কোটি ৩৭ লাখ ৫৬ হাজার ৮৭৯ টাকা আত্মসাৎ করেন।

আরএম/এফকে