শিক্ষামন্ত্রী ডা. শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, বৈশ্বিক অতিমারির করোনার কারণে সারাবিশ্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদেরও হয়েছে। শিক্ষায় এর প্রভাব পড়েছে। তবে লার্নিং লস বা গ্যাপ পূরণে সময় লাগবে। একটি বা দুটি শিক্ষাবর্ষে তা পূরণ হবে না। করোনাকালে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে আমরা ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থীকে পড়াশোনায় যুক্ত করতে পেরেছি। অতিমারির কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা নিজেরা চেষ্টা করে শেখার যোগ্যতা অর্জন করেছে, প্রযুক্তি ব্যবহার শিখেছে। এতে অনেক সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘লার্নিং লস’ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ মিলিয়ে বাজেট শতকরা তিন ভাগের কাছাকাছি। এটাকে আরও বাড়াতে হবে। ২০০৭ সালে বিএনপি-জামায়াত আমলের শেষ বছরে আমাদের সারা দেশের বাজেট ছিল ৬০ হাজার কোটি টাকা। এখন আমাদের শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে বাজেট প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা। সেই অর্থে বিনিয়োগ অনেক বেশি। বিনিয়োগ টাকার অঙ্কে কত হচ্ছে তার চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে শুধু শিক্ষা এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ সেটা শুধু শিক্ষায় নয়, খাদ্য, পুষ্টি, বিদ্যুৎ, আইসিটি ও যোগাযোগে যে বিনিয়োগ হচ্ছে এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নানা রকম প্রভাব শিক্ষার ওপর আছে। তাছাড়া আমার অনেক টাকা আছে কিন্তু কারিকুলাম ভালো না, তাহলে আউটকাম কি ভালো হবে? অনেক টাকা আছে কিন্তু শিক্ষক ভালো না তাহলে আউটকাম পাব না। টাকা আছে কিন্তু টেকনোলজি ব্যবহার করতে পারছি না। আবার টাকাও আছে সবকিছু আছে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছি না, তাহলেও হবে না।

তিনি আরও বলেন, এখন ভালো একটি শিক্ষাক্রম হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। আমরা এখন যেসব কাজ করছি সেগুলো শেষ হলে বাজেট বাড়বে। আমি তো বলছি, শিক্ষায় একটি মেগা প্রজেক্ট হবে।

দীপু মনি বলেন, আমরা এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক ক্লাব গঠন করতে চাচ্ছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্লাব বেইজ হবে। খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হবে। এখন রোবোটিক ক্লাব হচ্ছে, নানান কিছু হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা ভালো করছে। তাদেরকে আরও এগিয়ে দিতে হবে। শিক্ষা রিক্রুটম্যান্ট প্রক্রিয়াকে আরও অনেক ভালো করার চেষ্টা করছি। শিক্ষকদের সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা যত ভালো করতে পারব, আমরা তত এগিয়ে যেতে পারব।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই গবেষণা কাজ সম্পন্ন করা হয়। গবেষণা কাজে ১৮ হাজার ৮৩৮ জন প্রাথমিক শিক্ষার্থীর ওপর অভীক্ষা পরিচালিত হয়। গবেষণা প্রতিবেদনের ওপর মতামত দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন,  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহমদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য এবং বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (প্রাথমিক) ড. এ কে এম রেজাউল হাসান।

এমএম/এমজেইউ