রাজধানীর প্রগতি সরণি ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে অ্যামফিটামিনযুক্ত ২১ হাজার পিস ইয়াবাসহ চার মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন– মারসা পরিবহনের চালক মাহমুদুল করিম (৪৩), মাদক কারবারি রুমা আক্তার (৪২), মাদকের ডিলার নকিবুল ইসলাম (২১)  ও খুচরা মাদক ব্যবসায়ী মো. মোস্তফা কামাল ওরফে কামাল।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দিবাগত রাত থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত পৃথক দুটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডিএনসির ঢাকা মেট্রো. কার্যালয়ের (উত্তর) সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান।

তিনি জানান, ডিএনসির কাছে গোপন তথ্য ছিল, মাদক কারবারিরা দীর্ঘদিন ধরে নানা কৌশলে মাদকের কারবার করে আসছে। তারা কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান এনে ঢাকার একাধিক স্থানে সরবরাহ করে আসছিল। এ তথ্য পাওয়ার পর গ্রেপ্তার মাহমুদুল করিম ও রুমা আক্তারের গতিবিধি মনিটরিং কারা হচ্ছিল। সর্বশেষ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাছে তথ্য আসে যে, সে ইয়াবার একটি চালান কক্সবাজার থেকে ঢাকায় নিয়ে আসবে এবং ঢাকায় দুই বা তিনটি স্থানে সরবরাহ করবে।

এ তথ্য অনুযায়ী অধিদপ্তরের রমনা সার্কেলের টিম তাদের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ শেষে আজ ভোর সাড়ে ৪টায় চট্ট মেট্রো-ব-১১-১৯১৮ নম্বরের মারসা পরিবহনের একটি বাসসহ মাহমুদুল করিম ও রুমা আক্তারকে প্রগতি সরণি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রুমার জুতার ভেতরে বিশেষভাবে তৈরি চেম্বারে লুকায়িত ও গাড়ির ড্যাসবোর্ড থেকে মোট ৪ হাজার ৮২৭ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় পরিচালিত হওয়া অভিযানটির বিষয়ে  মো. মেহেদী হাসান জানান, গোপন সংবাদ আসে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম হয়ে আসা ইয়াবার চালান একটি চক্র ঢাকায় ডেলিভারি করবে। এ সংবাদ পাওয়ার পর শুক্রবার দুপুরে মোহাম্মদপুর সার্কেলের  টিম বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৬ হাজার পিস ইয়াবাসহ মাদকের ডিলার নকিবুল ইসলাম ও খুচরা মাদক কারবারি মো.মোস্তফা কামাল ওরফে কামালকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা টেকনাফ, কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট সংগ্রহ করে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে আসছে।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

অভিযানের বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল বলেন, ইদানীং প্রায়শই বিভিন্ন পরিবহনের বাসচালকরা মাদকদ্রব্য ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হচ্ছেন বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা কক্সবাজারগামী বিভিন্ন পরিবহনের বেশ কয়েকজন বাসচালককে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কয়েকটি ক্ষেত্রে বাসও জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, পরিবহন মালিকদের নিশ্চিত হতে হবে, তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন ড্রাইভার/সুপারভাইজাররা কোনোভাবে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কি না। এ বিষয়ে বাড়তি নজরদারি ও সচেতনতা বাড়ানো দরকার।

এমএসি/এসএসএইচ/এফকে