এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আগামী ১৫ জুন থেকে ৪ মাসব্যাপী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। সেই সঙ্গে আগামী ১৫ জুলাই থেকে ৩ মাসব্যাপী কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

মঙ্গলবার (২৩ মে) নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় 'এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধ' এ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব তথ্য জানান।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে আরও বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমাদের যে নিয়মিত কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছি তার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমরা আরও বেশি নজর দিতে চাই। বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণগুলোতে আমরা আরও বেশি নজর দিতে চাই। সেজন্য আমরা শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও আজকের সভায় আমন্ত্রণ করেছি। যাতে তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারেন।

মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ঢাকা শহরে গণপূর্ত অধিদপ্তর, রেলওয়ে, ওয়াসা, পুলিশ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অধিদপ্তর ও বোর্ড ইত্যাদি অনেক সংস্থার অনেক আবাসন ও স্থাপনা রয়েছে। এছাড়াও এখানে রিহ্যাবের প্রতিনিধি এসেছেন। আপনারা জানেন যে, নির্মাণাধীন শতভাগ ভবনে আমরা মশার লার্ভা পাই। বিশেষ করে চৌবাচ্চাসহ অন্যান্য যেসব অবকাঠামো করা হয়, সেখানে পানি জমে থাকে।

তিনি বলেন, আমরা চাই, সেসব নির্মাণাধীন ভবন ও স্থাপনায় যেন এডিসের প্রজননস্থল সৃষ্টি না হয় সেজন্য আপনারা যথাযথভাবে তদারকি করবেন। আপনারা সেসব জায়গায় এডিস মশার প্রজননস্থল নির্মূল না করতে পারলে আমাদের জানাবেন। আমরা তা নির্মূলের ব্যবস্থা নেব। কিন্তু পরবর্তীতে সেসব স্থাপনার সুরক্ষা আপনাদেরই নিশ্চিত করতে হবে। ডেঙ্গু হতে ঢাকাবাসীকে সুরক্ষা দিতে আমরা সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করি।

মেয়র বলেন, এডিস মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া রোগ হয়ে থাকে। যা অনেক সময় প্রাণহানি ঘটায়। সে জন্য আমাদের মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের বড় অংশই হলো এই ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ করা, এডিস মশার বিস্তার রোধ করা। সেলক্ষ্যে যে কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি তার অন্যতম হলো উৎস নিধন। এটি আমাদের (ডিএসসিসি) সৃষ্ট কোনো কর্ম পদ্ধতি বা উদ্ভাবন নয়। সিডিসি কর্তৃক এডিস মশা নিধনে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও কার্যকর হাতিয়ার হলো উৎস নিধন। সারাবিশ্বে যে কর্ম পদ্ধতিতে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা হয় আমরা তা অনুসরণ করে তার পূর্ণ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে চলেছি।

করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির সভায় একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি জানান, চলতি বছর এখন পর্যন্ত শনাক্তকৃত মোট ১ হাজার ৪৮৭ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ডিএসসিসি এলাকার রোগীর সংখ্যা ২৩২ জন। যা ১৬ শতাংশেরও কম।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, রেলওয়ের ঢাকা ডিভিশনাল মেডিকেল অফিসার ডা. রিপন দাস, রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট সোহেল রানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. মো. হাসান ফারুক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার উপ-পরিচালক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, বিজিবির লে. কর্নেল নুরজাহান আক্তার, বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক মো. আবদুল হক, রাজউক সদস্য তন্ময় দাস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পেস্টিসাইড রেগুলেশন অফিসার মো. এমদাদুল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ডা. ফাতিমা জোহরা প্রমুখ।

এএসএস/এসকেডি