মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচতে অক্সিজেন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু লোহা কাটাসহ ভারী শিল্পে ব্যবহৃত অক্সিজেন যদি রোগীর জন্য ব্যবহার হয়, তাহলে সেটা অবশ্যই ক্ষতিকর ও জীবনের জন্য হুমকি। এমন ঘটনা ঘটেছে খুলনার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে। দুটি হাসপাতালে রোগীদের সরবরাহ করা হয়েছে লোহা কাটার কাজে ব্যবহৃত অক্সিজেন। 

অক্সিজেন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের কোনো লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও একটি প্রতিষ্ঠান থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়েছে খুলনার রাশিদা মেমরিয়াল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক এবং লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতাল। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে এ অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাহী ম্যাজিস্টেটের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ মে) দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে এমন অভিযান চালানো হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শফিউল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিল্পকারখানায় লোহা কাটাসহ ভারী কাজে ব্যবহৃত অক্সিজেন খুলনার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের সরবরাহের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের প্রতিনিধি হিসেবে ওষুধ পরিদর্শক, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধি হিসেবে সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শক ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি হিসেবে একজন চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, অভিযানে অনুমোদিত দুটি হাসপাতালে লিন্ডে বিডি ও স্পেক্ট্রা কোম্পানির সিলিন্ডার পাওয়া যায়। কিন্তু মার্চের আগে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে হাসপাতাল দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডার ক্রয় করত তার ক্রয় রসিদ দেখাতে ব্যর্থ হয়। পরে অননুমোদিত অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রকি অক্সিজেনে অভিযান চালানো হয়। ওই প্রতিষ্ঠানে মেডিকেল অক্সিজেন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের কোনো লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও অভিযানকালে সেখানে শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের পাশাপাশি লিন্ডে বিডি ও স্পেক্ট্রা কোম্পানির সিল সম্বলিত মেডিকেল কাজে ব্যবহৃত অক্সিজেন গ্যাসের অনুরূপ সিলিন্ডার পাওয়া যায়। যার পাঁচটিতে গ্যাস ভর্তি ছিল ও ৩০টি সিলিন্ডার খালি ছিল। প্রতিষ্ঠানটি মেডিকেল অক্সিজেন গ্যাস উৎপাদনের অনুমোদনের স্বপক্ষে কোনো প্রকার রেকর্ডপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়।

দুদক আরও জানায়, অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অপরাধে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাহী ম্যাজিস্টেটের উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের মালিক খুরশিদ আলমকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থ দণ্ড অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়। এ বিষয়ে কমিশনের অনুমোদনক্রমে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। 

আরএম/ওএফ