তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবিতে দেশব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ জুন) সন্ধানী বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের উদ্যোগে দেশব্যাপী সন্ধানী বাংলাদেশের ৩৫টি ইউনিটে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধন থেকে তরুণ চিকিৎসকরা তামাকের ক্ষতিকর দিক থেকে জনসাধারণকে রক্ষায় এবং ২০৪০ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনীর খসড়া দ্রুত অনুমোদনের দাবি জানান।

এ সময় বক্তারা বলেন, দেশে তিন কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। আর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া তামাক ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। তাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রণীত খসড়া সংশোধনীটি আসন্ন সংসদ অধিবেশনে উত্থাপন এবং সংসদ সদস্যদের ভোটে পাশ করে চূড়ান্ত করা হলে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতাগুলো দূর হবে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ইউনিটগুলো হলো- ঢাকা মেডিকেল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, মুগদা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ, ইষ্ট ওয়েস্ট অ্যান্ড আপডেট ডেন্টাল কলেজ, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ, শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ, রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ, সিলেট এম এ জি মেডিকেল কলেজ, জালালাবাদ রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ, পার্ক ভিউ মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হবিগঞ্জ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ সিরাজগঞ্জ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ,  মাগুরা মেডিকেল কলেজ, যশোর মেডিকেল কলেজ, রংপুর মেডিকেল কলেজ, এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ, নীলফামারী মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ জামালপুর, শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ।

উল্লেখ্য, ইউনাইটেড ফোরাম অ্যাগেইনস্ট টোব্যাকো, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং সন্ধানী বাংলাদেশসহ বিভিন্ন তামাক বিরোধী সংগঠন ও ১৫ হাজারের বেশি ব্যক্তি ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) যুগোপযোগী করে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উন্নীত করতে ছয়টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করে। সেগুলো হলো- আইনের ধারা ৪ ও ৭ বিলুপ্ত করা, অর্থাৎ সকল পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রর্দশনী নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির যেকোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০শতাংশ করা; বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং ই-সিগারেটসহ সকল ইমার্জিং ট্যোব্যাকো প্রোডক্টস পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।

টিআই/এমজে