জলভাগের অত্যন্ত দক্ষ শিকারী বলঅ হয় কুমিরকে। তবে উভচর প্রাণীকূলের প্রাণী বলে স্থলভাগেও শিকারের পেছনে তাড়া করার ক্ষমতা রয়েছে শক্তিশালী এ প্রাণিটির। সেই প্রাণীটিই কী না কাঁদে? সত্য-মিথ্যা অনেকেরই অজানা। তবে কেউ কান্নার ভান করলে বা মিথ্যা দুঃখ প্রকাশ করলে মানুষ তার কান্নাকে কুমিরের কান্নার সঙ্গে তুলনা করে।

রাজনীতিবিদ বা অন্য কারও মুখ থেকে কুমিরের কান্নার প্রবাদ আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন। এমতাবস্থায় প্রশ্ন জাগে, আসলেই কী তারা কাঁদে? আসলে তাদের কান্না বেরিয়ে আসে, কিন্তু এটাকে কান্না বলা যায় না। মাংস চিবানোর সময় তারা প্রচুর বাতাস নিঃশ্বাস নেয়, যার ফলে গ্রন্থির ওপর চাপ পড়ে এবং চোখ থেকে জল আসতে শুরু করে।

কেন এই উপমা?
এর পাশাপাশি একটি কারণও বলা হয়েছে যে কুমিরের চোখের পাতা পড়ে যখন, তখন চোখ ভেজা রাখতে চোখে পানি আসে। তারা যে সচেতনভাবে করে তা নয়। এটা ভিন্ন শারীরিক প্রক্রিয়া। এই কারণেই ‘কুমিরের কান্না’ প্রবাদটি ব্যবহার করা হয় কারও কান্নাকে মিথ্যা হিসাবে বর্ণনা করার জন্য। মানুষই একমাত্র প্রাণী, যাদের আবেগে চোখে জল আসে।                                                              

কুমির সম্পর্কে আরও একটি কাহিনী প্রচলিত আছে। কুমির খুব চালাক প্রাণী। এরা শিকারকে কব্জা করার জন্য প্রথমে মায়াবী চোখের পানি ফেলে প্রতারণা করে। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সব তথ্য মোটেও সঠিক কুমির চোখের পানি ফেলে কারণ সেই জল তাদের চোখ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। ফলে এরা শিকারকে স্পষ্ট দেখতে পায়।                                         

অশ্রুসজল চোখের ওপর একটি পাতলা আবরণ তৈরি করে। এই আবরণ তিনটি উপাদান দ্বারা গঠিত: শ্লেষ্মা, পানি এবং তেল। শ্লেষ্মা চোখের ওপরকে ঢেকে রাখে, পানি একরকম প্রাকৃতিক লবণাক্ত দ্রবণ সরবরাহ করে, যা প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও খনিজ সরবরাহ করে। তেল চোখকে শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।

এসএম