বুধবার (৭ জুন) স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বরাত দিয়ে প্রকাশিত ‘বিএসএমএমইউর অনিয়ম খতিয়ে দেখা হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী’- শিরোনামের সংবাদটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাখ্যা দিয়েছে।

ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকাশিত সংবাদে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বরাত দিয়ে যে বক্তব্য ছাপা হয়েছে সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হলো, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থায়ন করে ইউজিসি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সংস্থা হলো সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের সভাপতি উপাচার্য। বিএসএমএমইউ এর অধীন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের গভর্নিং বডির সভাপতিও উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত নিয়োগ কমিটির সভাপতি সবসময়ই উপাচার্য। কিন্তু বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের নিয়োগ কমিটিতে উপাচার্যের নির্দেশে ১ম-৯ম গ্রেডের জন্য সভাপতি প্রো-ভিসি প্রশাসন ও ১০-২০তম গ্রেডের জন্য প্রো-ভিসি গবেষণা ও উন্নয়নকে মনোনীত করা হয়েছে। এখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য জনগণকে ভুল বার্তা দিচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করছে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ  নিজেই নিয়োগ কমিটি পুনর্গঠন করেছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা তার নিজস্ব ও ব্যক্তিগত মন্তব্য বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করে।
 
প্রকাশিত সংবাদের প্রসঙ্গত অংশে যে 'অসত্য তথ্য' প্রকাশ করা হয়েছে সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য হলো- উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ ১৯৮৫ সালে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন করে ১৯৯১ সালে সহকারী অধ্যাপক হন। এরপর ২০০৭ সালে সহযোগী অধ্যাপক হয়েছেন। তাই উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের অনিয়মের আশ্রয়, পদোন্নতি নিয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা ভিত্তিহীন। কারণ উপাচার্য শিক্ষাগত যোগ্যতার সব শর্ত পূরণ করেই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক বডি সিন্ডিকেটের অনুমোদনের মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়েছেন। কোর্সে ভর্তির বিষয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হলো তৎকালীন প্রশাসন যথাযথ নিয়ম মেনেই তাকে ভর্তির সুপারিশ করে। তাই উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের অনিয়মের আশ্রয় বিষয়টি অযাচিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে উপাচার্যের পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজনসহ নিয়োগের ক্ষেত্রে যে অনিয়মের কথা বলা হয়েছে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হলো, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এর মেজো ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমডি/এমএস প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে নিজের যোগ্যতায় মেধা তালিকার ভিত্তিতে নির্বাচিত হয়েছেন। উপাচার্য পদাধিকার বলে কমিটির প্রধান। বুয়েট এর ২টি ক্যাম্পাস এবং বিসিপিএস ভেন্যুতে ভর্তি পরীক্ষার দিনে হলগুলো নিয়মিত পরিদর্শন করা ছাড়া ঐ কমিটিতে উপাচার্যের সুনির্দিষ্ট কোনো দায়িত্ব ছিল না। পরীক্ষা সমাপনান্তে ফল প্রকাশের কাজে উপাচার্য কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। অতএব, প্রকাশিত সংবাদে উপাচার্যের মেজো ছেলের বিষয়ে আনীত অভিযোগটি মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন। 

নিয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হলো, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ, ভর্তিসহ সব পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও সংবিধি অনুযায়ী যথাযথ নিয়ম মেনে অনুষ্ঠিত হয়। এক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটির মাধ্যমে এই কার্যাবলী সম্পন্ন হওয়ার পরে তা সিন্ডিকেটে অনুমোদন করা হয়। কোনো ব্যক্তি বিশেষ চাইলেই এই নিয়মের ব্যত্যয় করে তার কোনো আত্মীয় স্বজনকে সুযোগ করে দিতে পারেন না। এখানে আরো উল্লেখ্য যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যদের স্ত্রী, ছেলে, মেয়েসহ অনেক আত্মীয়-স্বজন নিজের যোগ্যতাবলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিরত আছেন।

জেডএস