সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররাই লিখছেন অননুমোদিত ওষুধ
চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ কেন্দ্রীয় চর্ম ও সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে (আমেরিকান হাসপাতাল) অভিযান পরিচালনা করেছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার (১৯ জুন) অভিযান পরিচালনা করে ছয় লাখ টাকার ওষুধ জব্দ করার পাশাপাশি তিনটি ফার্মেসিকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
জেলা প্রশাসন জানায়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে আমেরিকান হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে হাসপাতালটির সামনে থাকা মা মেডিকেয়ার ও স্বাগতা ফার্মেসিতে বিপুল পরিমাণে অননুমোদিত ওষুধ পাওয়া যায়। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব ফার্মেসি মালিকরা জানান, সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররাই এসব অননুমোদিত ওষুধ লিখছেন। যে কারণে তারা এগুলো বিক্রি করছেন।
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফার্মেসি মালিক জানান, দোকানে এমন বিদেশি ক্রিম রয়েছে যেগুলোর দাম এক থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রতি ক্রিমে ডাক্তাররা ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত কমিশন পান। এছাড়া এ হাসপাতালের রোগীদের মেডিলিভ নামক একটি ল্যাবে যাবতীয় টেস্ট করানোর জন্য বলে দেওয়া হয়।
একই সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে হাসপাতালটির রোগীরা অভিযোগ করেন, ডাক্তাররা এমন ওষুধ লেখেন যা এখানে অবস্থিত কয়েকটি ফার্মেসি ছাড়া অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।
সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অনিয়মের সরাসরি প্রমাণ পেয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। এসময় তিনি হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে অসাধু ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বলেন, অভিযানে কয়েকজন রোগীর প্রেসক্রিপশন যাচাই করা হয়েছে। এসময় অননুমোদিত ওষুধ লেখার বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অভিযানের সময় থাকা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক এস এম সুলতানুল আরেফীন বলেন, অভিযানে বেশ কিছু ওষুধ পাওয়া গেছে যেগুলো ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের নিবন্ধিত নয়। এগুলো কোনো ফার্মেসিতে বিক্রি করা যাবে না এবং কোনো ডাক্তার এগুলো প্রেসক্রিপশন করতে পারবেন না। কিন্তু এই সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা কেন এটি প্রেসক্রিপশন করছেন সেটি আমি বলতে পারব না।
এমআর/কেএ