প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা সমুদ্রসীমায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের উপকূল অঞ্চলে যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দরকার, তার জন্য ১৯৯১ সালে আমরা বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় একটি বিল আনার জন্য সংসদে প্রস্তাব করেছিলাম। তখন সরকারে ছিলেন খালেদা জিয়া। আমাদের এই প্রস্তাবটা কণ্ঠভোটে নাকচ করে দেয়। তখন আমরা ডিভিশন ভোটের দাবি করি। ডিভিশন ভোটে আমরা জয়লাভ করি।

আজ (বুধবার) সকালে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জাহাজ কমিশনিং অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে চট্টগ্রাম বিসিজি পতেঙ্গা বার্থ অনুষ্ঠানস্থলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, বাঙালি জাতির উন্নত জীবনধারা, এটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর একমাত্র লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে তিনি সারাজীবন আন্দোলন-সংগ্রাম করেন। আমাদের রাজনৈতিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার, আমাদের সংস্কৃতির অধিকারের জন্য তার সংগ্রাম ছিল। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়, বাংলাদেশ অরক্ষিত ছিল। ৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন।   

সরকারপ্রধান বলেন, গেল ১৪ বছরে কোস্ট গার্ডের বহরে সংযুক্ত হয়েছে ১৫৪টি আধুনিক নৌযান। ভবিষ্যতে এর দায়িত্ব আরও বাড়বে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে বিশ্বমানের করে গড়ে তোলা হচ্ছে কোস্ট গার্ডকে। ২০৪১ সালের মধ্যে কোস্টগার্ড হবে নিজস্ব জনবলে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি স্মার্ট বাহিনী। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। 

শেখ হাসিনা বলেন, দুটি জাহাজ দিয়ে জলদস্যু দমনের নামে কোস্টগার্ড গঠন করা হয়েছিল। আর যে বহুমুখী দায়িত্ব রয়েছে কখনও বিএনপি সরকার অনুধাবন করেনি। আমরা যখন সরকার গঠন করি তখন কোস্টগার্ডকে আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিই। সমুদ্রসীমায় আমাদের যে অধিকার রয়েছে সে বিষয়ে আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। ’৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আমরা ক্ষমতায় ছিলাম। 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে  সমুদ্রসীমার সাথে সাথে উপকূলীয় অঞ্চলকে সুরক্ষিত করা। অর্থনৈতিক দিক থেকেও সমুদ্র সম্পদ কাজে লাগাতে হবে। এসব বিষয় লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেই। 

সরকারপ্রধান বলেন, ২০২৬ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত কোস্টগার্ডে সকল আবহাওয়া এবং গভীর সমুদ্রে চলাচলের উপযোগী আরও কয়েকটি জাহাজ সংযোজন করে দিয়ে এ বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করা হবে। ২০৩১ থেকে ’৪১ সালের মধ্যে কোস্টগার্ড হবে নিজস্ব জনশক্তিতে একটি স্মার্ট বাহিনী। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ করতে চাই। সে কারণে প্রতিটি বাহিনীকেও প্রযুক্তি ও দক্ষতার দিক থেকেও উপযুক্তভাবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হতে হবে।


এমএসআই/এনএফ