আর মাত্র ৩ দিন বাদেই মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ত্যাগের উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার কর্মস্থল থেকে নিজ গৃহে ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। তারা নিরাপদ বাহন হিসেবে সবসময়ই ভরসা করেন ট্রেনে। তাদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে বরাবরে মতো এবারও স্টেশন ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

দেশের প্রধান স্টেশন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গত ঈদুল ফিতরের মতো এবারও তিন স্তরে চেকিং ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে তিন স্তরে চেকিং ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও সেটির দুই স্তরই  অকার্যকর বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রোববার (২৫ জুন) সকালে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, মূল রাস্তা থেকে পার্কিং এরিয়া হয়ে টিকিট কাউন্টার পর্যন্ত যাত্রীদের হেঁটে আসতে হচ্ছে। স্টেশনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে কোনো রিকশাকে ওই এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। শুধুমাত্র প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল যাত্রী নামিয়ে দিতে সেখানে প্রবেশ করছে।

পার্কিং এরিয়া থেকে ঢুকতেই হাতের বামে রয়েছে টিকিট কাউন্টার। সেখানে ১ থেকে ৬ নম্বর কাউন্টার থেকে দেওয়া হচ্ছে স্ট্যান্ডিং টিকিট। হাতের ডানে চোখে পড়বে পুলিশ, র‌্যাব এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) কন্ট্রোল রুম। সোজা আরেকটু এগিয়ে স্টেশনের ৩ স্তরের টিকিট চেকিং ব্যবস্থার প্রথম স্তর। সেখানে যাত্রীদের টিকিট ও এনআইডি মিলিয়ে দেখার কাজে আছেন প্রায় ১৫ জন ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনার (টিটিই)। তাদের সঙ্গে আরও আছেন আরএনবির সদস্যরা।

সেখানে দেখা গেছে, কয়েকজন টিটিই শুধুমাত্র টিকিট আছে কিনা, সেটি দেখছেন। এনআইডি মিলিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করছেন না। কিছু কিছু সচেতন নাগরিক টিকিট ও এনআইডি একসঙ্গে দিলেও সেটি দেখছেন না। যাদের টিকিট নেই, তাদের হাতে লিখে স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া হচ্ছে।

পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরএনবির এক সদস্য ঢাকা পোস্টকে জানান, অনেকেরই টিকিটের সঙ্গে এনআইডি মিলে না। তাই যাদের টিকিট আছে, তাদেরই প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।

যাত্রীরা জানিয়েছেন, নিয়ম করেও নিয়ম কার্যকর করছে না কর্তৃপক্ষ। তাতে আমরা যারা নিয়মের মধ্যে আছি, তাদের খারাপ লাগে।

দ্বিতীয় চেক পয়েন্ট হচ্ছে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের আগে ও আন্তঃনগর টিকিট কাউন্টারের সামনে। টিকিট অনলাইনে বিক্রি করায় এই টিকিট কাউন্টারগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।

সেখানে দেখা গেছে, টিটিই ও আরএনবির সদস্যরা গল্প করছেন। তাদের সামনে-পেছন দিয়ে যাত্রীরা পার হয়ে যাচ্ছেন অনায়াসে। মাঝে-মধ্যে যাত্রীদের পার হয়ে যেতে হাত নেড়ে ইশারা করছেন।

তৃতীয় চেক পয়েন্ট একদম প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের মুখে। সেখানে লাইন ধরে এগিয়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একজন টিটিই চেকিং করেছেন। একজনকে চেকিং করতে গিয়ে সামনে-পেছন দিয়ে ১০ জন পার হয়ে যাচ্ছেন। এভাবেই চলছে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ৩ স্তরের চেকিং ব্যবস্থা।

আগামীকাল ২৬ জুন অফিস শেষে সরকারি ছুটি শুরু হবে। এ সময় রেল থেকে শুরু করে বাসস্ট্যান্ড সব জায়গায় ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়বে। এমন চেকিং ব্যবস্থায় গতবারের মতো এবারও ৩ স্তরের চেকিং ব্যবস্থা ভেঙে মানুষজন ট্রেনের ছাদে উঠতে পারবেন কি না, সেটি এখন সময়ের ব্যাপার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের চেকিং ব্যবস্থা ঠিক আছে। সব জায়গায় আমাদের লোকজন আছে।

ভিডিও দেখানোর পর তিনি বলেন, সকালের দিকে যাত্রী কম হওয়াতে এমন হতে পারে। আমরা বিষয়টা দেখব।

এমএইচএন/এসকেডি