এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না রাকিবের
চলতি বছর আইডিয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল আদনান সাঈদ রাকিবের (১৮)। কিন্তু তা আর হলো না। রোববার (১৬ জুলাই) রাত ১১টার দিকে চা খেতে বের হয়ে ধানমন্ডি শেখ জামাল ক্লাবের সামনে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন তিনি।
সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
বিজ্ঞাপন
হাসপাতালে আসা নিহত আদনানের ভাই হৃদয় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমরা তিন ভাই। রাকিব ছিল সবার ছোট। আমার বাবা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন। আমাদের বাসা ধানমন্ডি গ্রিন রোডের স্টাফ কোয়ার্টারে। রাতে পড়ার সময় ধানমন্ডি বয়েজ কলেজের তার এক বন্ধু রায়হান তাকে ফোন দেয়। রাকিব বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তা পার হয়। এরপর শেখ জামাল ক্লাবের সামনে ফুটপাতে চা খাচ্ছিল। এ সময় কয়েকজন ছিনতাইকারী গতিরোধ করে তার রেডমি মোবাইল নিয়ে টানাটানি করে।
তিনি বলেন, মোবাইল দিয়ে দিতে সে অস্বীকার করলে তার ডান কাঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ছিনতাইকারীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় সে রাস্তা পার হয়ে বাসার গেটের সামনে এসে পড়ে যায়। এরপর আমাদের এক প্রতিবেশী চাচা আমার বাবাকে ডাকতে থাকে। আমার বাবা গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। পরে আমি দ্রুত নেমে এসে দেখি আমার ভাই রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছে। তাড়াতাড়ি করে কয়েকজনের সাহায্যে তাকে উদ্ধার করে পাশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসক আমার ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আগামী ১৮ আগস্ট থেকে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল রাকিবের। আমার ভাই অনেক নম্র, ভদ্র ও শান্তশিষ্ট ছিল। আমার ভাইকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। দুপুরে আমার ভাইয়ের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। সেখান থেকে গ্রিনরোড স্টাফ কোয়ার্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকায় জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবু তালেব বলেন, ধানমন্ডিতে আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী রাকিব হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা মো নুরনবী বাদী হয়ে একটি মামলা (মামলা নং-১৬) দায়ের করেছেন। হত্যার পর থেকে আসামি ধরার জন্য আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। আশা করি যারা এই ঘটনায় জড়িত দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা যাবে।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ইতোমধ্যে যেসব ছিনতাইকারী এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, প্রযুক্তির সাহায্যে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
এসএএ/কেএ