দেশের বিভিন্ন স্থানে নানান শ্রেণির মানুষ স্বাধীনতা পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে কৃষি-পতিত জমি লিজ নিয়ে বসবাস করে আসছে। সম্প্রতি ভূমি মন্ত্রণালয় এক পরিপত্র জারি করে বাৎসরিক লিজ মানির হার এক শতাংশ থেকে ৬০০ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। এর ফলে গরীব লিজ গ্রহীতারা নির্দিষ্ট সময়ে লিজ নবায়ন করতে পারছেন না।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ অর্পিত সম্পত্তি লিজ গ্রহীতা সমিতি কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, অর্পিত সম্পত্তি সম্পর্কে ভূমি মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালে স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত প্রদানের উদ্দেশ্য খসড়া বিধিমালা তৈরি করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। অর্পিত সম্পত্তি আইনে বলা ছিল 'ক' তফসিলভুক্ত সম্পত্তির দাবিদার নেই এবং কমপক্ষে দশ বছরের বেশি সময়ে লিজ নেওয়া বসবাসকারীদেরকে ন্যূনতম সালামিতে স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত দেওয়া হবে।

তারা বলেন, সারাদেশে লিজ নিয়ে অসংখ্য পরিবার বসবাস করে আসছে এবং ধার্যকৃত লিজ মানি পরিশোধ করে আসছে। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশনে হোল্ডিং নম্বর, গ্যাস-বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ এবং বিএস খতিয়ানে দখল কলামে লিজ গ্রহীতার নাম সন্নিবেশিত আছে। এসব সম্পত্তির কোনো দাবিদার না থাকায় অর্পিত সম্পত্তি স্বল্প সালামি মূল্যের বিনিময়ে স্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদানে কোন প্রকার বাধা বা প্রতিবন্ধকতা নেই। পরবর্তী সময়ে বাড়িঘরগুলো পুরনো ও জরাজীর্ণ হয়ে গেলেও ভূমি মন্ত্রণালয় কোনো প্রকার সংস্কারের কাজ করেনি। বরং ২ থেকে ৩ বছর পর পর লিজের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। যদিও ভূমি মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে বলা হয়েছে যে, ২৪ বছরে কোনো প্রকার লিজ মানি বৃদ্ধি করা হয়নি, যা ভুল। সময়ে সময়ে বহুবার লিজ মানির হার বৃদ্ধি করা হয়েছে।

আইন অনুযায়ী- ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনায় ৩ লক্ষ টাকা শতক, অন্যান্য বিভাগীয় শহরে ২ লাখ টাকা শতক, জেলা শহরে দেড় লাখ টাকা শতক এবং উপজেলা পর্যায়ে এক লাখ টাকা হারে সালামির হার নির্ধারণ করা যায়। সুতরাং ভূমি মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের মাধ্যমে হঠাৎ করে বাৎসরিক লিজ মানির হার ৬০০ শতাংশ বৃদ্ধি করাটা অযৌক্তিক। এক্ষেত্রে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র প্রত্যাহার করে পূর্ব হারে লিজ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

তাছাড়া একসঙ্গে লিজ নিয়ে বসবাসকারীদের মধ্যে অর্পিত সম্পত্তির প্রকৃত অবস্থান বিবেচনায় রেখে স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত প্রদান করারও দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- শহীদুল আলম লস্কর, উত্তম দে, মোহাম্মদ কামাল, হোসেন মীর মহব্বত হোসেন, চন্দন কুমার নাগ প্রমুখ।

ওএফএ/এমজে