‘চুক্তি নয়, নিয়মিত চাকরি চাই’ এই স্লোগানে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো মাঠে নেমেছেন পল্লী বিদ্যুতের লাইন ক্রু লেভেল-১ এর শ্রমিকরা। দাবি আদায়ে এদিন বৃষ্টিতে ভিজে আন্দোলন করেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

সোমবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর খিলক্ষেতে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সামনে এ আন্দোলন করেন শ্রমিকরা।

শ্রমিকদের দাবি, চাকরি স্থায়ী না হওয়ায় সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। গত এক মাসে বিদ্যুতের লাইনে কাজ করতে গিয়ে লাইন ক্রু লেভেল-১ এর পাঁচজন শ্রমিক মারা গেছেন। তাদের পরিবারকে কোনও ধরণের সহযোগিতা না করে উল্টো এসব শ্রমিকদের মৃত্যুর দায় তাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে বিদ্যুৎ বোর্ড।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে আন্দোলনরত এক শ্রমিক মোবাইলে ঢাকা পোস্টকে বলেন, দ্বিতীয় দিনের মতো বৃষ্টির মধ্যেই আমাদের আন্দোলন চলছে। গত রাতে অনেক শ্রমিক খিলক্ষেতে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সামনে শুয়ে ছিলেন। আমাদের চাওয়া, বৈষম্য দূর করতে হবে। আমাদের চুক্তিভিত্তিক থেকে নিয়মিত করতে হবে। আমরা কোনও অফিস সহায়তা পাই না। অফিসের কাজে আমরা মারা যাব, অথচ আমাদের পরিবারকে কোনও সুবিধা দেওয়া হবে না। এটা হতে পারে না। গত এক মাসে আমরা পাঁচজনকে হারিয়েছি। তারা লাইনে কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। অথচ বোর্ড থেকে কোনও সহায়তা দেওয়া হয়নি। কোনো মেডেকেল সহায়তাও পাচ্ছি না।

শ্রমিকদের ৬ দাবি- 

১. সকল লাইনজু লেভেল-১ (চুক্তিভিত্তিক) কে নিয়মিত করতে হবে।

২. আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোন লাইন-ক্রুকে চাকরিচুত্য করা যাবে না। কারো বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না।

৩. যে সকল লাইন-ক্রুরা লাইনের কাজ করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের পরিবারের একজন সদস্যকে (স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, ভাই, বোন) যোগ্যতা অনুযায়ী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে নিয়মিত কর্মচারী পদে নিয়োগ প্রদান করতে হবে।

৪. সকল লাইন-ক্রুদের নিয়োগের তারিখ অনুযায়ী লাইনম্যান গ্রেড-০৯, গ্রেড-০২, শিক্ষানবিশ পদে পদমর্যাদা দিতে হবে। চাকরির বয়স অনুযায়ী মূলবেতন নির্ধারণ করতে হবে।

৫. সকল লাইন-ক্রুকে চাকুরির প্রবেশকাল থেকে এরিয়া বোনাস, ঈদ বোনাস, বৈশাখী ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, ৫% বেসিক বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।

৬. সপ্তাহে সাত দিন, ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবার স্বার্থে বর্তমান ইনস্ট্রাকশনের পরিবর্তন করে অফিসের ধরন অনুযায়ী লাইনম্যান প্রাপ্তির সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। সকল অফিসের লোকবল বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিতে হবে। শূন্য পদে নিয়মিত লোকবল নিয়োগের মাধ্যমে লোকবলের ঘাটতি পূরণ, দুর্ঘটনার সংখ্যা হ্রাস করার জন্য যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ ও নিরাপত্তা যন্ত্র নিশ্চিত করতে হবে।

এনআই/এমএসএ