সরকারিভাবে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য গাড়ি বরাদ্দ না থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ ৬ বছর ধরে তা ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করছেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের তিন পরিদর্শক।

ব্যাংকটি মতিঝিল অফিসে ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে বিধি বহির্ভূতভাবে গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

অন্যদিকে ঘুষের বিনিময়ে ভুয়া দাতা দেখিয়ে সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির জাল দলিল তৈরি এবং বালাম বইয়ের পাতা পরিবর্তন করার অভিযোগে রাজশাহী সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অভিযান পরিচালনা করেও ঘাটলা পেয়েছে দুদকের পৃথক আর একটি টিম।

সোমবার (৪ আগস্ট) অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে সংস্থাটির উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযানের পর প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়া গেছে। তবে নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে বিস্তারিত প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে কমিশন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের তিনজন পরিদর্শকদের বিরুদ্ধে অফিস কর্তৃক বরাদ্দ না থাকা সত্ত্বেও ২০১৭ সাল থেকে একটি সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার এর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযানে যায় এনফোর্সমেন্ট টিম। অভিযানকালে এনফোর্সমেন্ট টিম বাংলাদেশে কৃষি ব্যাংকের আশেপাশে ছদ্মবেশে অবস্থান করে অভিযোগে বর্ণিত গাড়ির উপস্থিতির জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। বেলা পৌনে ১২টায় অবৈধভাবে ব্যবহার করা গাড়িতে করে অফিসে আসেন অভিযোগ সংশ্লিষ্ট এক পরিদর্শক। এরপর গাড়ি নম্বর নিয়ে অফিসের গাড়ির প্রকিউরমেন্ট শাখায় যায় টিম। সেখানে থাকা লগবুক ও অন্যান্য নথিপত্র যাচাই করে দেখতে পায় ৩ জন পরিদর্শকই ২০১৮ সাল থেকে বিধি বহির্ভূতভাবে গাড়ি ব্যবহার করছেন, অভিযানে এর সত্যতা পাওয়া যায়।

অন্যদিকে গতকাল রাজশাহী জেলার সদর উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের রেকর্ড কিপারের বিরুদ্ধে একই কর্মস্থলে ১২ বছর চাকরি, ঘুষের বিনিময়ে ভুয়া দাতা দেখিয়ে সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির জাল দলিল তৈরি এবং বালাম বইয়ের পাতা পরিবর্তন করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পৃথক আরও একটি অভিযান পরিচালনা করে দুদকের রাজশাহী অফিস।

টিম প্রথমে ছদ্মবেশে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আগত দলিল দাতা ও গ্রহিতাদের সঙ্গে কথা বলে এবং কর্মরত দলিল লেখকদের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে। পরবর্তী সময়ে জেলা রেজিস্টার ও সদর সাব-রেজিস্টারের (অ: দা:) সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলে দলিল লেখক সমিতির সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। অভিযানকালে সদর রেজিস্ট্রি অফিস এনফোর্সমেন্ট টিমকে অভিযোগ উল্লিখিত দলিল, বালাম বই ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র তাৎক্ষণিক সরবরাহ করতে পারেনি। রেকর্ডপত্র প্রাপ্তির টিম কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানা গেছে।

আরএম/এসএম