করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় সাত দিনের যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তার সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত আগামী বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) নেওয়া হবে।

সোমবার (৫ এপ্রিল) মন্ত্রিসভার বৈঠক (ভার্চ্যুয়াল) শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেখি আমরা কী হয়। মানুষকে কো-অপারেট করতে হবে। আপনারা তো বার বার বলতেছেন। কিন্তু এখনও পুরোপুরি কো-অপারেশন…। সবাই যদি মাস্ক ব্যবহার করে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তাহলে তো অসুবিধা হওয়ার কথা না।

এখন যে পরিস্থিতি আছে এই পরিস্থিতি থাকলে কি লকডাউন বাড়ানো হবে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেখি, আমরা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করছি।

অফিসে কত শতাংশ জনবল উপস্থিত থাকবে, ৫০ শতাংশ নিয়ে চলবে কি না, সব মন্ত্রণালয় খোলা থাবে কি না- এসব প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা বলে দিয়েছি কমফোর্ট অনুযায়ী কমানোর জন্য। অফিস চালানোর জন্য যতটুকু দরকার ততটুকু থাকবে।

রোজার সময় কি একই (উপস্থিতি) থাকবে- এ প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, দেখি আমরা পাঁচ থেকে সাত দিন পর কী অবস্থা হয়। বৃহস্পতিবার আমরা রিভিউ করবো। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার এটিকে লকডাউন বলছে না, এটি কঠোর বিধিনিষেধ।

এর আগে সরকার করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে  ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করে। এরপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় শনিবার (৩ এপ্রিল) সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ৫ এপ্রিল, সোমবার থেকে সাতদিনের জন্য লকডাউনের ঘোষণা আসতে পারে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এক ভিডিও বার্তায় লকডাউন প্রসঙ্গে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধের স্বার্থে সরকার দু-তিনদিনের মধ্যে সারা দেশে এক সপ্তাহের লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে লকডাউন চলাকালে শুধু জরুরি সেবা দেয় এমন প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। আর শিল্প-কলকারখানা খোলা থাকবে, যাতে শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন শিফটে কাজ করতে পারে।

লকডাউনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অধিদফতরের পক্ষ থেকে ১২ দিনের সম্পূর্ণ লকডাউনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকার বলেছে প্রথম এক সপ্তাহ হবে। পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, লকডাউনকালে অত্যাবশ্যকীয় সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকবে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। লকডাউন চললে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক ও নার্সের ছুটি আপাতত স্থগিত থাকবে বলেও জানান তিনি।

পরে রোববার (৪ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে গণপরিবহন, দোকানপাট, শপিংমল, হাটবাজার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তবে ওষুধ ও খাবারের দোকান খোলা রাখা যাবে। 

এসএইচআর/আরএইচ