দেশে করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় নতুন করে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৭৫ জন।  

এতে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৯ জনে। আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ হাজার ৩১৮ জনে।  গত কয়েকদিন ধরে প্রতিদিনই ৫০ জনের ওপরে মারা যাচ্ছেন।  

সোমবার (৫ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯৩২ জন। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৪১৪ জন।

এ সময়ে ৩১ হাজার ৯৭৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয়েছে ৩০ হাজার ২৩৯টি নমুনা। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৮ লাখ ১৩ হাজার ৬২৪টি। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। 

এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৫২ জনের মধ্যে ৩৪ জন পুরুষ, বাকি ১৮ জন নারী। ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে, ২ জন মারা গেছেন বাড়িতে। মোট মারা যাওয়া ৯ হাজার ৩১৮ জনের মধ্যে পুরুষ ৭ হাজার ৪ জন, নারী ২ হাজার ৩১৪ জন।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মারা যাওয়া ৫২ জনের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ৩২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন এবং শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন। 

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিনজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

গত বছরের শুরু থেকেই করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই জারি করা হয় লকডাউন। এতে থমকে যায় দেশগুলোর অর্থনীতির চাকা। বাংলাদেশেও সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পর্যায়ক্রমে জেলাভিত্তিক চলাচল সীমিত করা হয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকলে বিভিন্ন দেশ শর্তসাপেক্ষে লকডাউন তুলে নেয়। এরই মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রতিষেধক টিকার প্রয়োগ শুরু হয়। বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হচ্ছে।

সাত দিনের কঠোর নিষেধাজ্ঞা শুরু
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাত দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। সোমবার (৫ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর করা হচ্ছে। নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল থেকে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ আছে। বন্ধ হয়ে গেছে আন্তঃজেলা বাস-ট্রেন-লঞ্চ চলাচল। 

লকডাউন মানি না স্লোগান, দোকান খোলার দাবি 
এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় গণপরিবহন চলাচল ও বিপণিবিতানগুলো বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় চার ঘণ্টা দোকান খোলা রাখার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার কয়েকশ ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারী। সোমবার বেলা ১১টায় তারা নিউ মার্কেটের সামনের সড়ক অবরোধ করেন।

বিধিনিষেধের সময় বাড়বে কি না, সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় সাত দিনের যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তার সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত আগামী বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) নেওয়া হবে।

এইচকে