ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি
ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। তারা বলেছেন, বিশ্বের যেখানেই প্রাইভেট কারের উপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে সেখানেই যানজট, সময় অপচয়, জ্বালানি অপচয়ের মত সমস্যাগুলো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উদযাপনের মধ্য দিয়ে আমরা নীতিনির্ধারকদের কাছে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ এবং হাঁটা, সাইকেল, গণপরিবহনবান্ধব নগর যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবি জানাই।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে ধানমন্ডি ২৭ এর মোড় থেকে আবাহনী খেলার মাঠ পর্যন্ত আয়োজিত ‘স্বল্প দূরত্বে হেঁটে ও সাইকেলে চলি, ব্যক্তিগত গাড়ি পরিহার করি ’ শীর্ষক র্যালিতে বক্তারা এ কথা বলেন।
কর্মসূচিতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ির কারণে সৃষ্ট সমস্যা সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত। গাড়ি কেন্দ্রিক নগর যাতায়াত পরিকল্পনার কারণে গাড়ির সংখ্যা যেমন বেড়েছে, ঠিক তেমনি ট্রাফিক জ্যামও বেড়েছে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে। ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। বাংলাদেশে 'কার ফ্রি ডে' অনেক বছর ধরে উদযাপন করা হলেও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে কোন টেকসই উদ্যোগ বা দিবসটি জাতীয় পর্যায় থেকে পালনের কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি।
বিজ্ঞাপন
ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, ধারণ ক্ষমতার থেকে অনেক বেশি পরিমাণে ব্যক্তিগত গাড়ি ঢাকা শহরে রয়েছে। ফলে যানজট, দূষণসহ বিভিন্ন সমস্যাও অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে চলেছে। যথাযথ নগর পরিবহন পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যক্তিগত গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে যথাযথ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে। সেই সঙ্গে পরিকল্পনাগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে গাড়িমুক্ত রাস্তা তৈরি করা প্রয়োজন।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, রাজউকের আওতাধীন এলাকায় ১৩,৮৬৫ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে মাত্র সাড়ে ১০ শতাংশ রাস্তা ২০ ফুটের বেশি চওড়া। অপ্রশস্ত সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল সময় নিয়ন্ত্রিত করা বা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, এবং সপ্তাহে একদিন সমগ্র শহর ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ঢাকা শহরে ৫-৭ শতাংশ মানুষের ব্যক্তিগত গাড়ি আছে। তাতেই যানজট এমন অবস্থা ধারণ করেছে যে গাড়ির গতি হাঁটার গড় গতির নিচে নেমে গেছে। ঢাকার বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, বাস সার্ভিস উন্নয়ন এবং হেঁটে যাতায়াতের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের বিকল্প নেই।
এএসএস/এমএসএ