মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) জাতিসংঘে পালিত হয়েছে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস-২০২১। দিবসটি উপলক্ষে  জাতিসংঘ এবং ৬টি দেশের স্থায়ী মিশন যৌথভাবে ‘কোভিড-১৯ অতিমারির সময়ে অটিজম: বৈশ্বিক সাড়া এবং পুনরুদ্ধারে কীভাবে প্রযুক্তি সহায়তা করতে পারে’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সাইড ইভেন্ট আয়োজন করে। 

জাতিসংঘে বাংলাদেশ, ব্রাজিল, কুয়েত, পোল্যান্ড, কাতার ও কোরিয়া স্থায়ী মিশন এবং জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়াবলী বিভাগ ও অটিজম স্পিক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ইভেন্টটিতে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের অটিজম ও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের শুভেচ্ছা দূত সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। 

তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারিতে শিক্ষা ও চিকিৎসা বিঘ্নিত হওয়ার ফলে সারাবিশ্বে অটিজমের শিকার শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশে বিদ্যমান সামাজিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা, শক্তিশালী তথ্য-প্রযুক্তি অবকাঠামো এবং কমিউনিটি-ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা অনেক পরিবারকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহায্য করেছে।’

বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন সমাজে অটিজমের শিকার পরিবারগুলো সামাজিক চ্যালেঞ্জ ও নিগ্রহের মুখোমুখি হয়েছে ‍উল্লেখ করে সায়মা ওয়াজেদ বলেন, ‘এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সচেতনতা বৃদ্ধি ও তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে টেকসই ও ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তন আনতে পেরেছে।’

চলমান পরিস্থিতিতে অটিজমের ক্ষেত্রে বাড়তি সচেতনতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে সায়মা বলেন, ‘অটিজম ও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবার বিভিন্ন ধরনের সামাজিক নিগ্রহের শিকার হয়। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গত সাত বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি।’

ইভেন্টে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ ও কাতারের স্থায়ী প্রতিনিধি। অটিজম সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, প্রতিশ্রুতি ও গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। 

তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধিতা ও নিউরো-ডেভেলাপমেন্টাল ডিজঅর্ডার ব্যক্তিদের সুরক্ষায় বাংলাদেশে আমরা শক্তিশালী আইন ও বিধি প্রণয়ন করেছি। বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে প্রতিবন্ধিতা সহায়ক ই-সেবা, রেফারেল সেবা এবং দেশব্যাপী সহায়তা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ।’

অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তায় বিশেষ করে করোনা মহামারির এই সময়ে নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও গবেষণায় আরও বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই প্রযুক্তি-বিভাজন দূর করতে হবে। প্রযুক্তি সহজলভ্য হতে হবে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে সকলেরই এতে প্রবেশাধিকার থাকতে হবে।’

ইভেন্টে সুনির্দিষ্ট ইস্যুগুলো তুলে ধরেন জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়াবলী বিভাগের পলিসি সমন্বয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল। প্যানেল আলোচনায় অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বিশেষজ্ঞরা ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

এনআই/ওএফ/জেএস