প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু। আজও দেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের শরীরে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ (১৪২৮) আয়োজনে কোনো অবস্থাতেই জনসমাগম করা যাবে না বলে জানিয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

তবে, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনলাইন বা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে নববর্ষের অনুষ্ঠান আয়োজনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৭ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আ স ম হাসান আল আমিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা জানানো হয়।

পয়লা বৈশাখের প্রধান আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা। গত বছরের ন্যায় এবারও বাতিল হচ্ছে এটি

চিঠিতে বলা হয়, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলা নববর্ষ ১৪২৮ উদযাপন সংক্রান্ত গৃহীত কর্মসূচির বিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা নির্দেশনা অনুসরণ করে জনসমাগম হয় এমন অনুষ্ঠান পরিহার করা, সম্ভব হলে অনলাইন বা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অনুরোধ জানানো হলো। কোনো অবস্থাতেই জনসমাগম করা যাবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে প্রতিবছরই পহেলা বৈশাখ ঢাকার শাহবাগ-রমনা এলকায় মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এ শোভাযাত্রায় চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন স্তরের ও বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে।  বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ঢাকা শহরে এটি প্রবর্তিত হয়।

কিন্তু করোনার বিস্তার ঠেকাতে গতবছরও (১৪২৭ বঙ্গাব্দ) মঙ্গল শোভাযাত্রার অনুষ্ঠান বন্ধ রাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। গতবার করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে একটা পোস্টার অবমুক্ত করা হয়। সেখানে লেখা ছিল ‘মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়।’

স্বাধীনতার পর দ্বিতীয়বারের মতো বন্ধ থাকছে নববর্ষের সব উদযাপন। থাকবে না রমনার বটমূলে ছায়ানটের গান, চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা। জানা যায়, রমনার বটমূলে ছায়ানটের বৈশাখবরণ শুরু হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। তবে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের চলাকালে বৈশাখবরণ অনুষ্ঠানটি হয়নি। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে প্রথমবারের মতো মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রাটি ২০১৬ সালে ইউনেসকোর অস্পর্শনীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় যুক্ত হয়।

করোনায় আক্রান্ত-মৃত্যু বাড়ছেই
বুধবার (৭ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্য মতে, দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হিসেবে রেকর্ড সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ সময় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৬২৬ জনের। করোনায় মারা গেছেন ৬৩ জন, যা এক দিনে তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। গত বছরের ১৮ মার্চে থেকে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৯ হাজার ৪৪৭ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫৯ হাজার ২৭৮ জনে। 

এর আগের দিন ৬ এপ্রিল করোনায় ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যা ছিল দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে একদিনে সর্বোচ্চ। এ সময় আক্রান্ত হিসেবে নতুন করে শনাক্ত হয়েছিল ৭ হাজার ২১৩ জন। এছাড়া করোনামুক্ত হয়েছে ৩ হাজার ২৫৬ জন। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ ৫ লাখ ৬১ হাজার ৬৩৯ জন।

এসএম