ডিআইজি হাবিবুর রহমান

করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হলেন ঢাকা রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।  

বুধবার (৭ এপ্রিল) রাতে ঢাকা পোস্টকে ডিআইজি হাবিবুর রহমানের করোনামুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের এসপি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) ড. মো. এমদাদুল হক।

তিনি বলেন, ডিআইজি হাবিবুর রহমানের সর্বশেষ করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে। তিনি এখন করোনামুক্ত। করোনামুক্ত হওয়ায় সন্ধ্যায় তিনি হাসপাতাল ছেড়ে নিজ বাসায় ফিরেছেন। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় গত ২৩ মার্চ তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে টানা ১৬ দিন চিকিৎসা নেন তিনি। শুরু থেকেই তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। এছাড়া শরীরের অন্য কোনো সমস্যা না থাকায় অক্সিজেন লেভেলও সবসময় ঠিক ছিল।  

এর আগে মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দুপুরে এসপি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) ড. মো. এমদাদুল হক জানান, ডিআইজি হাবিবুর রহমানের শরীর এখন অনেক ভালো আছে। তার শরীরে করোনার তেমন কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অক্সিজেন লেভেল থেকে শুরু করে সব কিছু ভালো আছে। এছাড়া তার শরীরে অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা নেই। তিনি করোনামুক্ত হয়েছেন কি না তা জানতে বুধবার (৩১ মার্চ) কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পরীক্ষা করা হবে। এই পরীক্ষার ফল পাওয়ার পর এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে আমরা আশা করছি, তিনি করোনা থেকে মুক্ত হওয়ার পথে আছেন।

সেসময় তিনি আরও জানান, ডিআইজি হাবিবুর রহমানের শরীরে করোনাভাইরাসের তেমন কোনো প্রভাব না থাকায় তাকে হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার সাধারণ ওয়ার্ড অর্থাৎ সাধারণ বেডে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
 
হাবিবুর রহমান ১৯৯৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ১৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হওয়ার আগে তিনি পুলিশ সদর দফতরে উপ-মহাপরিদর্শক (প্রশাসন-ডিসিপ্লিন) হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। বাংলাদেশ পুলিশের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। পদোন্নতিক্রমে পুলিশ সদর দফতরে অতিরিক্ত সহকারী মহাপরিদর্শক (সংস্থাপন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হাবিবুর রহমান।

সাভার বেদেপল্লীর জীবন বদলে দেওয়া, হিজড়া সমাজকে আলোর পথে আনাসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। সেখানে স্কুল, কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার, গাড়িচালনা প্রশিক্ষণকেন্দ্র ও বুটিক হাউসসহ নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ও বাল্যবিবাহ রোধে ভূমিকা পালন করেছেন।

হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠার পেছনে ভূমিকা পালন করেন এবং সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর অবদান ও ঢাকায় তাদের প্রথম প্রতিরোধ বিষয়ক ঘটনা নিয়ে তিনি ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’ নামে একটি বই লিখেছেন।

তিনি হিজড়াদের সামাজিক বৃত্তিতে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন। হিজড়া ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘উত্তরণ কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ’ কর্মসূচি চালু করেন এবং উত্তরণ ফাউন্ডেশন নামক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও জাকার্তায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসের আসরে ‘এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট’ নির্বাচিত হয়েছেন।

এমএসি/আরএইচ