ভিডিও ভাইরাল : গণমাধ্যম এড়িয়ে চলছেন বরগুনার সাবেক ডিসি
বরগুনার সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে এক নারীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও প্রশাসনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। বর্তমানে এ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিকেল থেকে ভিডিওটি ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ে। রোববার সন্ধ্যার পর বেশ কয়েকটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি আপলোড হলে তা মুহূর্তেই ছড়িয়ে যায়। এ ঘটনায় প্রশাসনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে নানা আলোচনা চলছে। কেউ-কেউ ভিডিওটির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ভিডিওটি নিয়ে আজকে অনেক কথাবার্তা, আলোচনা চলছে। তবে ভিডিওটি আসল কিনা তা আমরা নিশ্চিত নই।’
গণমাধ্যমকে এড়িয়ে যাচ্ছেন সেই ডিসি
বিজ্ঞাপন
ভিডিওটি নিয়ে বক্তব্য জানতে দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে হাবিবুর রহমানের দপ্তরে গেলে তিনি জানান, এখন ব্যস্ত আছেন। ১ ঘণ্টা পর আসতে।
এক ঘণ্টা পর দুপুর ২টার দিকে দপ্তরে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ সাড়ে ৩টায় গিয়েও দেখা মেলেনি হাবিবুর রহমানের।
তার দপ্তর থেকে জানানো হয়, হাবিবুর রহমান একটি কর্মশালায় আছেন। বিকেলে তার নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও ধরেননি তিনি।
আরও পড়ুন
জানা যায়, ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর বরগুনার ডিসি পদে যোগ দেন হাবিবুর রহমান। আড়াই বছর দায়িত্ব পালনের পর ২০২৩ সালের ৯ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে সরিয়ে উপ-সচিব পদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পদায়ন করা হয়। তিনি জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলামের কাছে ৩০ জুলাই দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। ৪ সেপ্টেম্বর উপ-সচিব পদ থেকে যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতিও পান হাবিবুর রহমান।
দুটি ক্লিপে মোট ৩ মিনিট ২২ সেকেন্ডের ওই ভিডিও এখন সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিছানায় শুয়ে ডিসির সঙ্গে গল্প করছেন ওই নারী। এ সময় ডিসির কাছে থাকা ৫০ হাজার টাকা দামের ফোন তিনি উপহার হিসেবে পাওয়ার কথা বলেন।
বরগুনার স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওই নারী প্রায়ই বরগুনা ডিসির বাংলোয় রাতযাপন করতেন। ডিসি ওই নারীকে তার বান্ধবী বলে পরিচয় দিতেন। বিমান ও স্পিডবোটে একত্রে ভ্রমণও করতেন তারা।
আরও পড়ুন
তিনি আরও বলেন, ওই নারী প্রায়ই ডিসির বাংলোতে আসতেন। এমনকি ডিসির সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতেও যান তিনি। হাবিবুর রহমানের নারী ও টাকার লোভ ছিল। বরগুনায় থাকাকালে তিনি এই জেলা থেকে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। যাওয়ার কয়েকদিন আগে নদীবন্দরের জমিতে ব্যবসায়ীদের ৪০টি দোকান ভেঙে দিয়ে দুই মাসের মধ্যে আবার ৮ কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে অবৈধভাবে একসনা ডিসিআর দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের শেষের দিকে জামালপুরের ডিসি থাকাকালীন অফিসের অফিস সহায়ক একজন নারীর সঙ্গে আহমেদ কবীরের আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে সে সময় খুব সমালোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে তাকে জেলা প্রশাসক পদ থেকে অপসারণ করা হয়।
এসএইচআর/এসকেডি