বিশ্ব পোলিও দিবস আজ
পোলিওকেও বিশ্ব থেকে বিতাড়িত করার অঙ্গীকার
বিশ্ব পোলিও দিবস আজ (২৪ অক্টোবর)। প্রতিবছর আজকের দিনে সারাবিশ্বে এই দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। এবছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য হলো পোলিও সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দ্রুত বিশ্বকে পোলিও মুক্ত করা।
জানা গেছে, বিশ্ব পোলিও দিবসের প্রচলন করে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল। ১৯৫৫ সালে বিজ্ঞানি জোনাস সক ও তার গবেষণাদল বিশ্বের প্রথম পোলিও টিকা আবিষ্কার করেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৬২ সালে তিনি তৈরি করেন ইন্যাকটিভেটেড পোলিওভাইরাস টিকা। এই যুগান্তকারী সাফল্যলে স্মরণীয় করে রাখতেই তার জন্মদিনটিকে বিশ্ব পোলিও দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়। তার সাফল্যের সূত্র ধরেই পরে অ্যালবার্ট স্যাবিন ১৯৮৮ সালে ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন তৈরি করতে সক্ষম হন, যা এখনও সারাবিশ্বে শিশুদের পোলিও থেকে সুরক্ষিত রাখতে দেওয়া হয়ে থাকে।
বিজ্ঞাপন
২০০২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপিয়ান অঞ্চলকে পোলিও মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল এই ২৪ অক্টোবর তারিখেই। সেই থেকেই এই তারিখটিকে বিশ্ব পোলিও দিবস হিসেবে পালনের প্রচলন শুরু।
চিকিৎসকদের মতে, পোলিও একটি ভাইরাস, যা দ্বারা পোলিওমাইলাইটিস নামক মারাত্মক সংক্রামক রোগ হয়ে থাকে। ওয়াইল্ড পোলিও ভাইরাস ৩ ধরনের। সেগুলো হলো- টাইপ ১, টাইপ ২ ও টাইপ ৩। এগুলোর মধ্যে টাইপ-২ ১৯৯৯ এবং টাইপ-৩ ২০২০ সালে পৃথিবী থেকে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। টাইপ-১ শুধুমাত্র পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে এখনও পর্যন্ত বিদ্যমান। আশা করা হচ্ছে সেটিও দ্রুতই নির্মূল করার মাধ্যমে সারাবিশ্ব থেকে স্মলপক্স বা গুটিবসন্তের ভাইরাসের মতো পোলিও ভাইরাসকেও নির্মূল করা সম্ভব হবে।
বিজ্ঞাপন
বর্তমানে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ব্যতীত সারাবিশ্ব পোলিও মুক্ত অবস্থায় রয়েছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকার ব্যাপক বাস্তবায়নের মাধ্যমে।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি-ইপিআইয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশ ১৯৯৫ সাল থেকে পোলিও মুক্ত হওয়ার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা শুরু করে এবং প্রতি বছর দেশে জাতীয় টিকা দিবস আয়জনের মাধ্যমে শিশুদের পোলিও টিকা খাওয়ানোর কার্যক্রম শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশে মোট ২১টি জাতীয় টিকা দিবস আয়োজিত হয় যাতে প্রায় ৯৮ কোটিরও বেশি শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়। অবশেষে এই ব্যাপক কর্মযজ্ঞের কল্যাণেই ২০১৪ সালে বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের অন্যান্য সব দেশের সঙ্গে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ পোলিও মুক্তির সনদ অর্জন করে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে দেশে ইপিআই হতে সরকারিভাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিশুদের অত্যন্ত কার্যকর ও নিরাপদ ৩ ডোজ ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন বা ওপিভি ও ২ ডোজ ফ্র্যাকশনাল আইপিভি দেওয়া হয়ে থাকে, যা পোলিও মুক্ত অবস্থা বজায় রাখতে অত্যন্ত জরুরি।
টিকাদানের আহ্বান জানিয়েছে অধিদপ্তর জানায়, ২০২৩ সালের বিশ্ব পোলিও দিবসে আসুন সবাই মিলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের সুস্থতার জন্য ইপিআই হতে জন্ম থেকে ১ বছরের মধ্য শিশুকে প্রদেয় সব টিকা নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই এবং গুটিবসন্তের মতো পোলিওকেও বিশ্ব থেকে বিতাড়িত করতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসি।
টিআই/এসএম