চোরাই মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে সেকেন্ডহ্যান্ড নামে বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটসহ নামিদামি শপিংমলে। এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত স্বয়ং মলের ব্যবসায়ীরাও।

গতকাল সোমবার চোরাই মোবাইল চক্রের মূলহোতাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ। উত্তরখান ও যমুনা ফিউচার পার্ক মার্কেটে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরই উঠে আসে এমন তথ্য।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. সাইফুর রহমান আজাদ। তিনি জানান, গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে শতাধিক চোরাই মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৩১ অক্টোবর উত্তরখান থানায় একটি মামলাও দায়ের হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. আল আমিন, মো. দিপু, মো.আলাউদ্দিন (বাবলু) ওরফে জাপান বাবু, মো.আলী বেপারী ও  মো. ইউনুছ আলী শুভ। এদের মধ্যে আল-আমিন চক্রটির মূলহোতা।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি জানান, গ্রেপ্তার জাপান বাবু ও আলী ব্যাপারী দীর্ঘদিন ধরে উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর ও টঙ্গী এলাকায় চুরি, ছিনতাই ও পকেটমারের মতো অপরাধ করে আসছে। বিভিন্ন রাস্তা বা যানবাহন থেকে তারা মোবাইল চুরি কিংবা ছিনতাই করে নিয়ে আসে। পরে তারা মোবাইলগুলো ব্র‍্যান্ড অনুযায়ী ৪-৬ হাজার টাকা করে শুভর কাছে বিক্রি করে। পরে শুভ এসব মোবাইল দিপুর কাছে ৮-১০ হাজার টাকায় বিক্রয় করত।

তৃতীয় পর্যায়ে দিপু ও শুভ এসব মোবাইল ১২-১৪ হাজার টাকায় আল-আমিন ও শাহজাহানের কাছে বিক্রি করে দিতো। মোবাইল ছাড়াও তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ ও ডিএসএলআর ক্যামেরা কিনতো আল-আমিন ও শাহজাহান। এর মধ্যে আল-আমিনের যমুনা ফিউচার পার্কে মোবাইলের দোকান রয়েছে এবং শাহজাহানের বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে মোবাইলের দোকান রয়েছে।

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার আল-আমিন এসব মোবাইল কিনে সফটওয়্যারের মাধ্যমে আইএমইআই পরিবর্তন করে সেকেন্ডহ্যান্ড ফোন নামে ২৫-৩০ হাজার টাকায় সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করত। এ ছাড়া সে ভারত, দুবাই, মালয়েশিয়া ও অন্যান্য দেশ থেকে চোরাই মোবাইল সংগ্রহ করত।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, এখন জিডি করে আর মানুষ তার ফোনগুলো পায় না। কারণ ফোন চুরি হওয়ার সাথে সাথেই তার আইএমইআই চেঞ্জ করে ফেলা হয়।

তিনি আরও বলেন, ফোন মানুষের অনেক আবেগের জায়গা। সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রে ছিনতাইকারী থেকে শুরু করে যমুনা ফিউচার পার্কের দোকানের মালিকও রয়েছে। সব পর্যায়ের আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

এ কর্মকর্তা আরও জানান, বাংলাদেশের চোরাই ফোন ইন্ডিয়াতে চলে যায় আর ইন্ডিয়ার ফোন বাংলাদেশে আসে। এ বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করা প্রয়োজন। আন অথরাইজড ফোন অথবা চোরাই ফোন অথবা পুরাতন ফোন কেনার ক্ষেত্রে সবার সতর্ক থাকা উচিত।

এমএসি/এমজে