মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড়/ ছবি: ঢাকা পোস্ট

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাতদিনের কঠোর নিষেধাজ্ঞা চলছে। এর মধ্যেই দোকান মালিক ও কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শপিংমল ও দোকান খোলা রাখার অনুমতি দেয় সরকার। শুক্রবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। 

এদিকে ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনের ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার। তাই লকডাউনের আগে পহেলা বৈশাখ ও ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে কেনাকাটা করছেন অনেকে। রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। অন্যদিকে শপিংমল ও দোকান খোলা রাখার পূর্বশর্ত স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি ক্রেতা-বিক্রেতা কাউকেই।

রোববার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর নিউমার্কেট, চাঁদনি চক শপিং কমপ্লেক্স, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোডসহ আশপাশের শপিংমল ও মার্কেটে এমন চিত্র দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব মার্কেটে বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। মানুষের উপচেপড়া ভিড়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানার ব্যাপারে উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে। মার্কেটগুলোর প্রবেশমুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকলেও মার্কেটের ভেতরে অনেককেই মাস্ক ছাড়া ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।

ক্রেতারা বলছেন, কঠোর লকডাউনের ঘোষণায় হঠাৎ মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে অনেকেই আগেভাগে পহেলা বৈশাখ ও ঈদুল ফিতরের কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন।

দীপা বালা নামের এক উদ্যোক্তা বলেন, পহেলা বৈশাখ ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিক্রির জন্য শাড়ি কিনতে মার্কেট এসেছি। এবার লকডাউন কতদিন স্থায়ী হবে বলতে পারছি না। তাই চাহিদা অনুযায়ী একদিনেই সব কিনে নিয়ে যাচ্ছি।

সাদিয়া জাহান নামের এক ক্রেতা বলেন, শুনেছি এবার লকডাউনে অনেক কড়াকড়ি হবে। তাই আজ রাতেই ঢাকা ছাড়ব। যেহেতু এর মধ্যে আর ঢাকা আসা হবে না, তাই একবারেই পরিবার-পরিজনের জন্য ঈদের কেনাকাটা করে নিয়ে যাচ্ছি।

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে শেষ মুহূর্তে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি খুচরা বিক্রেতারাও পাইকারি বাজারে ভিড় করেছেন। রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, সারা বছর আমরা পহেলা বৈশাখ, রোজা ও ঈদে ব্যবসার জন্য অপেক্ষা করি। কিন্তু গত বছর করোনার কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবছর বিক্রি একেবারেই কম। তারপরও কিছুটা হলেও যেন দোকান চালানো যায় তার জন্য পহেলা বৈশাখের শাড়ি নিলাম।

চাঁদনি চক শপিং কমপ্লেক্সের বিজনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করার। কোনো ক্রমেই যেন কেউ মাস্ক ছাড়া মার্কেটে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে।

অন্যদিকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত ফুটপাতে বসা দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। যাদের অধিকাংশই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। এসব দোকান বসানোর ক্ষেত্রেও উপেক্ষিত হয়েছে সামাজিক দূরত্ব মানার ব্যবস্থা।

তবে ফুটপাতের দোকানের দায়ভার মার্কেট মালিকরা নেবেন না বলে জানিয়েছেন ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট দক্ষিণ ব্লগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজী মো. শামসুল ইসলাম। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ফুটপাতের দোকানগুলো আমাদের দায়িত্বে নয়। আমরা মালিক সমিতি মার্কেটের দোকানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি।

আরএইচটি/এসএসএইচ