রাজধানীর মেরুল বাড্ডা থেকে অছিম পরিবহনে চড়ে মেরাদিয়ায় যাচ্ছিলেন আরেকটি বাসের চালক মো. সবুজ মিয়া। মেরাদিয়ায় নামার আগ মুহূর্তে বাসটিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে দগ্ধ হন সবুজ মিয়া। তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকরা জানান, সবুজ মিয়ার শরীরের ২৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। এছাড়া শ্বাসনালীও অনেকটা দগ্ধ হয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

সোমবার (৬ নভেম্বর) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হাই ডিফেনডেন্সি ইউনিটের (এইচডিইউ) সামনে দগ্ধ সবুজ মিয়ার স্ত্রী রুশেদা বেগমের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা পোস্টের। রাজনীতি না করার পরও তার স্বামীর দগ্ধ হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

রুশেদা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী তো কোনো রাজনীতি করে না, সে গাড়ি চালিয়ে সংসার চালায়। তাহলে আমার স্বামী আগুনে পুড়ল কেন?’

গতকাল (রোববার) অছিম পরিবহনের বাসটিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা (ছবি : সংগৃহীত) 

তিনি জানান, নয় বছরের মেয়ে স্বপ্না আক্তার লামিয়া ও ছয় বছরের ছেলে রোহান হাসানকে নিয়ে মেরুল বাড্ডা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন তারা।

প্রতিদিনের মতো রোববার সকাল ছয়টার দিকে মেরাদিয়া এলাকায় যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন সবুজ মিয়া। মেরাদিয়ায় গিয়ে তিনি নিজের গাড়ি নিয়ে বের হওয়া কথা ছিল। সবুজ রমজান পরিবহনের চালক, মেরাদিয়া থেকে ওই বাস ছেড়ে যায়— জানান রুশেদা বেগম

বার্ন ইউনিট সূত্রে জানা গেছে গতকাল বিকেলে সবুজ মিয়াকে জরুরি বিভাগ থেকে এইচডিইউতে স্থানান্তর করা হয়। আজ তার শরীরের দগ্ধ স্থানে ড্রেসিং করা হয়েছে।

রুশেদা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর অবস্থা ভালো না। তার যদি কিছু একটা হয়ে যায় তাহলে আমি দুই সন্তানকে নিয়ে কী করব? আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।’

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা তরিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না... যেহেতু তার শরীর দগ্ধ এবং শ্বাসনালীতেও পোড়া আছে।’

উল্লেখ্য, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের প্রথম দিন রোববার খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া এলাকায় অছিম পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে দগ্ধ হন বাসে থাকা সবুজ মিয়া। একই ঘটনায় বাসের হেল্পারসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।

এসএএ/কেএ