চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলায় আদালতে একদিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন ১০ জন। সোমবার (৬ নভেম্বর) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এসময় মিতুর স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারসহ অন্যান্য আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। 

আদালতে সাক্ষ্যপ্রদানকারীরা হলেন- চট্টগ্রামের ইপিক হেলথ কেয়ারের ইঞ্জিনিয়ার সোহেল রানা, ম্যানেজার (অ্যাডমিন) তারেক হোসেন, কাতালগঞ্জের জুমাইরা হোল্ডিংসের ম্যানেজার আতিক হাসান, একই প্রতিষ্ঠানের কেয়ারটেকার সাহাব উদ্দিন, হোটেল ওয়েল পার্কের ম্যানেজার মঈনুল হাসান, ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বিশ্বনাথ দাশ, ওয়েল ফুডের আইটি অফিসার শহীদুল আলম ও কর্মচারী আলাউদ্দিন এবং সাবেক মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই নজরুল ইসলাম ও কনস্টেবল মিল্টন দে।

তাদের মধ্যে ডিবির এএসআই নজরুল ইসলাম ও কনস্টেবল মিল্টন দে ঘটনার বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ কালেকশন করেছেন এবং বাকিরা সিসিটিভি ফুটেজ সরবরাহ ও প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন।

মহানগর দায়র জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আবদুর রশীদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মিতু হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত মোট ৩২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আজকে (সোমবার) ১০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে পুলিশের দুজনকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেছেন। বাকিদের জেরা করা হয়নি। আগামী ২৮ নভেম্বর মামলাটির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ওইদিনও ১০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তৎকালীন পুলিশ সুপার ও মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। 

তবে মামলাটিতে স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে স্বামী বাবুল আক্তারেরই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। ২০২১ সালের ১২ মে আগের মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একই দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে রয়েছেন বাবুল।

এদিকে, প্রথম মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারাজির আবেদন করেন বাবুলের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর নারাজি ও পিবিআইয়ের প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এরপর দুটি মামলাই তদন্ত করতে থাকে পিবিআই। তবে পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গত বছরের ২৫ জানুয়ারি মিতুর বাবার দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে বাবুলসহ ৭ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।

গত ১৩ মার্চ আলোচিত মামলাটিতে বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

এমআর/এসএম