ডিএনসিসির মার্কেটের অবৈধ দোকানদারদের তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচা বাজারের (কৃষি মার্কেট) ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনুদানের চেক বিতরণ ও মার্কেট পুণর্নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আসল কথা হলো কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট, রায়েরবাজার মার্কেটসহ ডিএনসিসির সব মার্কেটে বৈধ দোকানদারের পাশাপাশি অনেক অবৈধ দোকানদার রয়েছে। অবৈধ দোকানদাররাই নতুন আধুনিক ভবন নির্মাণ হোক এটা চান না। আমি ডিএনসিসির কর্মকর্তা ও কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়েছি অবৈধ দোকানদারদের তালিকা তৈরি করতে। অবৈধ দোকানদারদের তালিকা করে দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৈধ দোকানদাররা কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণে আপত্তি করবে না।

ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, কাওয়ান বাজারসহ কয়েকটি মার্কেটের অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক মার্কেটের দেয়াল খসে পড়েছে। যেকোনো সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ব্যবসায়ীরা বলে, যদি দুর্ঘটনা ঘটে আমরা মারা যাবো; তাও আমরা মার্কেট ছাড়বো না। এটা কোনো কথা হলো না। তাহলে ক্রেতাদের ক্ষতি হলে সে দায় কে নেবে। স্মার্ট বাংলাদেশে উন্নত স্মার্ট মার্কেট প্রয়োজন। এই ধরনের জরাজীর্ণ মার্কেট স্মার্ট বাংলাদেশে থাকতে পারে না। আমরা চাই এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলো ভেঙে আধুনিক মার্কেট নির্মাণ করে দেব। নতুন মার্কেট ভবন নির্মাণ মানে বরাদ্দপ্রাপ্ত দোকানদারদের দোকান নিয়ে নেওয়া না, বরং সুন্দর দোকান পাবেন।

তিনি বলেন, প্রতিটি মার্কেটে অগ্নি নির্বাপক সিস্টেমসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। মার্কেটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতিকে আহ্বান করছি, এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন করতে হবে। কৃষি মার্কেটের কাজ আজ থেকে শুরু হচ্ছে। ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিচ্ছি এটির কাজ যেন টেকসই হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মোহাম্মদপুর এলাকায় দুই বাড়ির মাঝখানে খালি জায়গায় যেখানে ময়লা ফেলা হতো সেটিকে বলা হতো মেথর প্যাসেজ। দুই বাড়ির মাঝখানে খালি জায়গা আমরা ঢালাই করে সুন্দর করে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মেথর প্যাসেজ নামটি পরিবর্তন করে এটির নাম দিয়েছি সার্ভিস প্যাসেজ। দয়া করে কেউ ময়লা ফেলে এটি নোংরা করবেন না।

বক্তব্য শেষে ডিএনসিসি মেয়র ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের হাতে অনুদানের চেক তুলে দেন এবং চেক বিতরণ শেষে নির্মাণ নামফলক উন্মোচন করে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

উল্লেখ্য, ক্ষতিগ্রস্ত মোট ৪১২ জন ব্যবসায়ীর প্রত্যেককে অনুদান হিসেবে ডিএনসিসি থেকে ২৫ হাজার টাকা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ২০ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়।

ডিএনসিসির অঞ্চল-০৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য সাদেক খান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ডিএনসিসির ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মোহাম্মদপুর নতুন কাঁচা বাজার (কৃষি মার্কেট) ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. সলিমউল্লাহ (সলু), ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফোরকান হোসেন, নারী কাউন্সিলর শাহিন আক্তার সাথী রোকসানা আলম প্রমুখ।

এএসএস/এসএম