‘কারার ঐ লৌহকপাট’— জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি কালজয়ী গান। ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই গানের সুর বিকৃতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন দেশ বরেণ্য নজরুল সংগীত শিল্পীসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। পাশাপাশি ভারতের চলচ্চিত্রে এই গানের সুর বিকৃত করার ব্যাপারে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তারা।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ গানের সুর বিকৃতির প্রতিবাদে আলোচনা ও প্রতিবাদ সভায় দেশবরেণ্য শিল্পীরা এ কথা বলেন। সভার আয়োজন করে বাঁশরী– একটি নজরুল চর্চা কেন্দ্র।

আলোচনা সভায় ড. লীনা তাপসী খান বলেন, কাজী নজরুল ইসলামের এত সুন্দর একটি কালজয়ী গান, সেই গানটি শুধু গান ছিল না, একটি স্বাদেশিক একটি সত্ত্বা তৈরি করেছিল। এই গানটি একটি জাতীয় সম্পদ, এই গানটি নিয়ে এ. আর রহমানের নাড়াচাড়া করা উচিত হয়নি।  

ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানের ব্যপারে কী চুক্তি হয়েছিল আমরা এখনো জানি না। আমরা এখনো ধোঁয়াশার মধ্যে আছি। এটা আমাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করতে হবে।

নজরুল সংগীতশিল্পী সালাউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমি শুধু একটি কথায় বলতে চাই— ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের পরবর্তীকালেও নজরুল নজরুলের মতো করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রতিটি বাঙালির ভেতরে। আমি এই গানের সুর বিকৃতির প্রতিবাদ জানাই।

সভায় স্বাগত বক্তব্যে বাঁশরীর সভাপতি ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান বলেন, কবির সকল সৃষ্টি বাঙালি জাতি তথা বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। এই কালজয়ী গানের বিকৃতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। অমর সৃষ্টি এই গানটি ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং জেল থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তিসহ সমস্ত রাজনৈতিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। 

একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল বলেন, আমাদের বাঙালি হিসেবে আমরা যদি দু’জন বাংলা সাহিত্যিকের নাম বলি তাহলে নজরুলের নাম বলতেই হবে। আমরা সেই নজরুলের গান ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ ষাটের দশকে কত হাজার বার গেয়েছি এর কোনো হিসাব নেই। আজ তার এই কালজয়ী গানের সুর বিকৃত করে ভারতের চলচ্চিত্রে প্রচার হচ্ছে, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। আমরা সবাই মিলে ভারতীয় হাইকমিশনে স্মারকলিপি দেব। 

এমএম/কেএ