ইফতারসহ সব খাবার নিরাপদ করতে ৯ প্রস্তাব
রাস্তায় ইফতার বিক্রি
উৎপাদন থেকে বণ্টন সব পর্যায়ে খাদ্যকে নিরাপদ করতে বিদ্যমান আইনের কঠোর প্রয়োগসহ ৯ দফা প্রস্তাবনা জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)। বুধবার (১৪ এপ্রিল) অনলাইনে আয়োজিত সংগঠনটির এক আলোচনা সভায় এসব প্রস্তাবনা জানানো হয়।
করোনা মহামারিকালে ইফতারসহ সব খাদ্যপণ্য ভেজালমুক্ত ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার দাবিতেই এই আলোচনা করা হয়। তাদের অন্যান্য প্রস্তাবনা গুলো হলো- করোনা মহামারি সময়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইফতার সামগ্রীর বিক্রির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা; খাদ্যে রাসায়নিক দ্রব্যাদি মেশানোর সঙ্গে জড়িত এবং রাসায়নিক দ্রব্যাদিযুক্ত ও ভেজাল খাদ্য বিক্রিকারীদের বিদ্যমান আইনের মাধ্যমে ও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দণ্ড প্রদান অব্যাহত রাখা; ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯, নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এবং ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৫ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা; ভেজালের সঙ্গে যুক্ত যেই হোক না কেন, এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা না করে জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে আইন প্রয়োগে সরকারের প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা; বিষ ও ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকারকে খাদ্যে বিষ ও ভেজাল মিশ্রণের উৎসমূল থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতা পর্যায়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা; সময়োপযোগী কীটনাশক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা; গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে কৃষক, উৎপাদনকারী, ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের রাসায়নিক দ্রব্যাদি, কীটনাশক, ভেজাল মিশ্রণের ক্ষতিকর দিক এবং আইনে বর্ণিত দণ্ড তুলে ধরে সচেতন করা এবং পণ্য আমদানি পর্যায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে বন্দরগুলোতে বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যাদি পরীক্ষা করা।
বিজ্ঞাপন
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, করোনা মহামারিকালে এই রমজানে খাদ্য পণ্যে ভেজালকারীদের কঠোর হাতে দমন করতে হবে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিনষ্টকারীদেরকেও কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশে খাদ্যপণ্যে ভেজাল রোধে তিনটি আইন থাকলেও এর যথাযথ প্রয়োগ দেখা যায় না বরং অসাধু মুনাফাখোরদের দৌরাত্ম্যে পবিত্র রমজান মাসে ব্যাপকভাবে খাদ্যে ভেজাল মেশানো হয়। এই করোনাকালে এগুলো রোধ করা না গেলে মহামারি আরও দীর্ঘায়িত হবে।
বক্তারা আরও বলেন, খাদ্য মানুষের অন্যতম প্রধান মৌলিক অধিকার। খাদ্য ছাড়া মানুষসহ কোনো প্রাণীই বেঁচে থাকতে পারে না। তবে সে খাবার অবশ্যই হতে হয় বিশুদ্ধ। দূষিত বা ভেজালমিশ্রিত খাদ্য মানুষের জন্য স্বাস্থ্যহানির কারণ হয়ে থাকে। রমজানে অতিরিক্ত লাভের আশায় ইফতারিতে অনায়াসে ভেজাল মেশায়। খাদ্যে ভেজাল এমন একটি নীরব ঘাতক, যা ধীরে ধীরে সুস্থ মানুষকে সুস্থ ধারা থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে।
বিজ্ঞাপন
তারা বলেন, বাংলাদেশে শুধু নয়, বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা, খাদ্যে ভেজাল ও আইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মানুষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় হিসেবে খাদ্যকে নিরাপদ রাখার লড়াই আজ বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ খাদ্য ভেজাল ও বিষক্রিয়া রোধ করা। একইভাবে এই করোনা মহামারি রোধ করার জন্যও খাদ্য পণ্যের দিকে বিশেষ নজর ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়গুলো বিশেষভাবে নজরে আনাও গুরুত্বপূর্ণ।
এই আলোচনা সভায় যুক্ত ছিলেন- পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সম্পাদক মেসবাহ সুমন, ৭১ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. খালেদ শওকত আলী, বারসিকের পরিচালক পাভেল পার্থ ও এ বি এম তৌহিদুল আলম, ইন্টারফেইথ সেন্টারের সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ, পরিবেশ বার্তার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, বানিপার সাধারণ সম্পাদক এম ওয়াহেদ প্রমুখ।
এমএইচএন/এফআর