পাবনার এক ব্যবসায়ীকে তার প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলে অর্থলোভে পাগল সাজিয়ে লোকচক্ষুর আড়ালে রাজধানীর একটি মানসিক হাসপাতাল ভর্তি করায়। এদিকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানরা কোনো খোঁজ না পেয়ে পুলিশের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের ইনবক্সে এ বিষয়ে অভিযোগ করে।

অভিযোগ পাওয়ার পর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলার একটি মানসিক হাসপাতাল ও রিহ্যাব সেন্টার থেকে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সোহেল রানা বলেন, পাবনার এক নারী পুলিশের ফেসবুক পেজের ইনবক্সে জানান, তার বাবাকে আগের ঘরের সন্তান ১৫ দিন আগে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তার বাবা পাবনা জেলার একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বহু আগেই ডিভোর্স হয়েছে। সেই স্ত্রীর সন্তান‌কে তি‌নি শুরু থে‌কেই আ‌র্থিক সহায়তা দি‌য়ে আসছিলেন। কিন্তু, সেই ছেলে জোরপূর্বক বাবার ব্যবসা দখলের পায়তারা করে। সুযোগ পেয়ে প্রথম ঘরের ছেলে তার বাবাকে রাস্তা থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তারপর, তাকে ঢাকার কোনো একটি বেসরকারি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে রেখেছে। প্রথম স্ত্রীর ওই সন্তান ফিল্মি স্টাইলে তার বাবার ব্যবসা দখল করে।

সোহেল রানা আরও বলেন, ব্যবসায়ীর দ্বিতীয় স্ত্রী ও পরিবার কোনো খোঁজ না পেয়ে পুলিশের শরণাপন্ন হয়। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও বার্তা পাঠিয়ে সহযোগিতা চায়। বার্তাটি দেখার পরপরই মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বিস্তারিত জানার পর সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশনা দেয়। পাশাপাশি পাবনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলমকে এ বিষয়টি তদারকির জন্য পরামর্শ দেয়। মাসুদ আলম জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে পরামর্শ করে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তদন্ত কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলামের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল মিডিয়া উইংয়ের।

তিনি আরও বলেন, পাবনা জেলা পুলিশের সার্বিক তৎপরতায় দ্রুত সময়ে ভিকটিমের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। শুক্রবার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পাবনা জেলা পুলিশের একটি টিম রাজধানীর বসিলার একটি মানসিক হাসপাতাল ও রিহ্যাব সেন্টার থেকে ঐ ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের সময় তার স্ত্রী ও কন্যা সঙ্গে ছিলেন। মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং সার্বক্ষণিকভাবে ভিকটিমের পরিবার ও পাবনা জেলা পুলিশের সঙ্গে এ বিষয়টি সমন্বয় করেছিল।

এ বিষয়ে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

এমএসি/ওএফ