স্বাস্থ্য সহকারী পদে থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন মোহাম্মদ সালা উদ্দিন নামে একজন। তিনি চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রকেট প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে তিনি নিয়মিত নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। তবে সরকারি চাকরিজীবী হয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি জানাজানির পর তোলপাড় চলছে চট্টগ্রামে।

তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সংশ্লিষ্ট আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল আহমেদ বরাবরে চিঠি পাঠিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। চিঠি পেয়ে অভিযুক্ত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল ও তার রকেট প্রতীক যাতে ব্যালটে না আসে সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার।

সালা উদ্দিন হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, তিনি সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড এলাকায় ফার্মেসির ব্যবসা করেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করা হয়েছে মাস্টার্স (এমএ)। তবে বাস্তবে এ প্রার্থী সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সহকারী পদে কর্মরত রয়েছেন। ২০১২ সালের ১৫ নভেম্বর এ পদে যোগ দেন বলে সিভিল সার্জন সূত্রে জানা যায়।

সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী জানান, সালা উদ্দিন নিজেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি অবহিত করে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে দোয়া চান। যা সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯ এর বিধি ২৫ এর পরিপন্থি। তিনি তথ্য গোপন করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি প্রতীকও পেয়েছেন। এর আগে কর্মক্ষেত্রে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকায় মোহাম্মদ সালা উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি জবাব দেননি।

সরকারি চাকরিতে থেকে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে মোহাম্মদ সালা উদ্দিন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, সরকারি চাকরিতে থেকে বিধি অনুযায়ী মোহাম্মদ সালা উদ্দিন প্রার্থী হতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আসনটির রিটার্নিং কর্মকর্তা, বিভাগীয় কমিশনার, নির্বাচন কমিশন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে আমরা চিঠি দিয়েছি।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মনোনয়নপত্রে ওই প্রার্থী নিজেকে ফার্মেসি ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করেছেন। যাচাই-বাছাইয়ে এক শতাংশ ভোটারের তথ্যে গরমিল থাকায় তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছিল। আপিলে নির্বাচন কমিশনও এ আদেশ বহাল রাখেন। শেষ পর্যন্ত তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। উচ্চ আদালত তাকে প্রতীক বরাদ্দের আদেশ দেন। আমরা তাকে প্রতীক বরাদ্দ দিই।

তিনি আরও বলেন, রোববার চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানানো হয় তিনি সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করেন। বিষয়টি জানার পর আমরা প্রার্থিতা বাতিল এবং তার প্রতীক যাতে ব্যালটে না আসে সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছি। কমিশন আদালতের নির্দেশনা এবং বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

এমআর/এসএসএইচ