রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ

কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) রাতে এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, কবরী ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার মৃত্যু দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। বাংলা চলচ্চিত্রের বিকাশে তার অবদান মানুষ আজীবন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। 

মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান রাষ্ট্রপতি।

এর আগে শুক্রবার রাত ১২টা ২০মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সারাহ বেগম কবরী।

গত ৫ এপ্রিল কবরীর ক‌রোনা রি‌পোর্ট পজিটিভ এলে তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দরকার হয় আইসিইউর। কুর্মিটোলা হাসপাতালে আইসিইউ খালি না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহযোগিতায় গত ৮ এপ্রিল তাকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

আইসিইউতে প্রায় এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশের জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী।

১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ‘সুতরাং’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ার শুরুর ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’, ‘পরিচয়’, ‘দেবদাস’, ‘অধিকার’, ‘বেঈমান’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘সোনালী আকাশ’, ‘দীপ নেভে নাই’-এর ম‌তো দর্শক‌প্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন কবরী।

২০০৬ সালে তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আয়না’ মুক্তি পায়। ‘এই তুমি সেই তুমি’ না‌মে দ্বিতীয় চল‌চ্চিত্র নির্মাণ কর‌ছেন কবরী।

এরপর রাজনীতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। যুক্ত হয়েছেন অসংখ্য নারী অধিকার ও সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭-তে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’।

১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জন্মগ্রহণ করেন কবরী। তার আসল নাম ছিল মিনা পাল। বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল এবং মা লাবণ্য প্রভা পাল। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। তারপর টেলিভিশন ও সবশেষে সিনেমায়। কবরী বিয়ে করেন চিত্ত চৌধুরীকে। সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিয়ে করেন সফিউদ্দীন সরোয়ারকে। ২০০৮ সালে তাদেরও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কবরী পাঁচ সন্তানের মা।

এইউএ/এফআর