দেশে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের আজ চতুর্থ দিন। শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অনেকটা ফাঁকা দেখা গেছে। যেসব গাড়ি চলছে সবই প্রাইভেট কার, অটোরিকশা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় রাস্তায় লোকজনও কম রয়েছে।

রাজধানীতে শেষরাতের বৃষ্টি প্রভাবে হালকা কনকনে বাতাসে সকালে রাজধানীর মিরপুর, ৬০ ফিট, আগারগাঁওসহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেল।

রাজধানীর ৬০ ফিট সড়কের কাছে বসানো হয়েছে পুলিশের চেক পোস্ট। সেই চেক পোস্ট অতিক্রম করছে ব্যক্তিগত গাড়ি। রিকশা চালকরা এই চেক পোস্টের আগেই যাত্রীদের নামিয়ে রিকশা ঘুরিয়ে নিচ্ছেন। চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য তাজুল ইসলাম বললেন, পরিচয়পত্র ও মুভমেন্ট পাস থাকলেই যেতে দিচ্ছি।

একটু সামনে গিয়ে দেখা গেলে, পাশের অলিগলির রাস্তা নিজস্ব পদ্ধতিতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ডাক ভবনের সামনের সড়কে যাবার পথেও লকডাউন লিখে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া। আগারগাঁও থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের সড়কে কিছু গাড়ির জটলা ছিল। তবে নিমিষেই সে জটলা আবার ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা মুভমেন্ট পাস দেখেই ছেড়ে দিচ্ছিলেন গাড়িগুলোকে। কিন্তু মহাখালী লেভেল ক্রসিংয়ে গিয়ে দেখা গেল, অর্ধেকের বেশি পথ বন্ধ। সেখানে ঢাকা উড়াল সড়কের কাজ চলছে। কিন্তু পুলিশের তল্লাশি নেই।

এভাবে কোথাও পুলিশের নজরদারি আবার কোথাও নজর ছাড়াই ঢাকায় বাধা নিষেধের চতুর্থ দিন পার হচ্ছে।

ফাঁকা মিরপুর-গাবতলীর সড়ক
চিরচেনা ঢাকা এখন ফাঁকা, কঠোর লকডাউনে এক অন্যরূপে সেজেছে রাজধানী। শহরের সব সড়কে কোনো জনমানব নেই। মাঝে-মধ্যে কোথাও দু-একটি রিকশা দেখা গেলেও নেই কোনো যাত্রী। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশজুড়ে কঠোর বিধিনিষেধের প্রভাবেই এমন অবস্থা রাজধানীর। মিরপুর ১, ২ ও ১০ নম্বর ও গাবতলী এলাকার চিত্র এমনই। 
মালেক হোসেন নামে মিরপুর-২ নম্বরের এক ব্যবসায়ী বলেন, প্রধান প্রধান সড়কগুলোর এমন চিত্র গতবছর করোনার সময় দেখেছি, আজ এখন দেখছি। করোনার কারণে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক থাকায় কেউ বের হচ্ছে না।

গাবতলী এলাকায় দেখা যায়, রোদ ঝলমলে দুপুর। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগেরই আভাস নেই। স্বাভাবিক সময়ে এই বেলায় শ্যামলী এলাকা থাকে লোকারণ্য। মিনিটে কতো গাড়ির যাতায়াত! ফুটপাতে গায়ে গায়ে লেগে থাকে মানুষের ভিড়। সেই শ্যামলীতে এখন সুনসান নীরবতা।

মিরপুর-১ নম্বর এলাকায় একজন পথচারীও নেই। অথচ কয়েকদিন আগেও এই ঢাকার মানুষ কল্পনাও করতে পারেনি এমন একটি সময় আসতে পারে।

এসব এলাকা ঘুরে আরও দেখা যায়, পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা খুব সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। কাউকেই বিনা প্রয়োজনে বাসার বাইরে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। কেউ যদি বের হন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, বের হয়েছে কেন সেই বিষয়ে। কেউ যদি বিনা প্রয়োজনে বের হন তাহলে তাদের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

মিরপুর-১ নম্বরে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সদস্য বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশজুড়ে কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। আমরা কাউকেই বিনা কাজে বাইরে ঘোরাঘুরি করতে দিচ্ছি না। যারা বের হচ্ছেন তাদের কাছে মুভমেন্ট পাস দেখতে চাচ্ছি। মুভমেন্ট পাস না থাকলে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছি। আমরা চাই সবাই সরকারের নির্দেশনা মেনে চলুক।

পিএসডি/এসআর/এসএম