নতুন বছর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একটি দিন অতিরিক্ত রয়েছে। এ কারণে ২০২৪ লিপ ইয়ার। সাধারণত প্রতি চার বছরে একটি লিপ ইয়ার হয়। প্রশ্ন হলো, কী এই লিপ ইয়ার? কেন এর প্রয়োজন? প্রতি চতুর্থ বছরই কি একটি লিপ ইয়ার?

লিপ ইয়ার কী?

বছরে সাধারণত ৩৬৫ দিন থাকে। কিন্তু একটি লিপ ইয়ারে ৩৬৬ দিন থাকে। লিপ ইয়ার ছাড়া ফেব্রুয়ারি মাস শেষ হয় ২৮ দিনে। আর লিপ ইয়ার বছরে ফেব্রুয়ারি মাস শেষ হয় ২৯ দিনে। কিন্তু তারপরও ফেব্রুয়ারি মাস বছরের সবচেয়ে ছোট মাস।

কেন লিপ ইয়ার চালু হয়েছিল?

একটি সৌর ক্যালেন্ডারের এক বছরে পৃথিবী সূর্যের চারপাশের বৃত্তাকার কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরতে সময় নেয় ৩৬৫ দিন, ৫ ঘণ্টা, ৪৮ মিনিট এবং ৪৬ সেকেন্ড। একটি সাধারণ বছর এভাবেই ৩৬৫ দিনে শেষ হয়। অতিরিক্ত প্রায় ছয় ঘণ্টা চার বছরে ২৪ ঘণ্টা হয়। এই ২৪ ঘণ্টা হলো পৃথিবীর একবার নিজের অক্ষের চারিদিকে ঘোরার সময়। সেই হিসাবে অতিরিক্ত সময় বা ২৪ ঘণ্টা চতুর্থ বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে অতিরিক্ত দিন হিসেবে যুক্ত হয়। এটি করা না হলে ফসলের চক্র এবং ঋতু পরিবর্তনের সময় ধীরে ধীরে বদলে যাবে। যা মানুষের সময় নির্ধারণের কৌশলকে বিভ্রান্তির দিকে পরিচালিত করবে।

লিপ ইয়ার কবে চালু হয়?

যিশু খ্রিষ্টের জন্মের ৪৬ বছর আগে জুলিয়াস সিজার লিপ ইয়ার চালু করেছিলেন, যা পরে ১২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে আরও সুনির্দিষ্টভাবে চালু হয়। জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে একটি বছরের সময়সীমা ছিল ৩৬৫ দিন। প্রতি চার বছর অন্তর সেটাই হয়ে ওঠে ৩৬৬ দিন। রয়াল মিউজিয়ামস গ্রিনউইচের ওয়েবসাইট অনুসারে, ইসলামিক ক্যালেন্ডার আল-হিজরাতে লিপ ইয়ারে ১২তম মাসে জুল হিজ্জাতে একটি অতিরিক্ত দিন যোগ করা হয়েছে। তবে এ পদ্ধতিটি ত্রুটিমুক্ত নয়। কারণ গণনার জন্য ব্যবহৃত ছয় ঘণ্টা আর প্রকৃত ৫ ঘণ্টা, ৪৮ মিনিট এবং ৪৬ সেকেন্ডের মধ্যে পার্থক্য আছে।

কেন প্রতি চার বছর অন্তর লিপ ইয়ার হয় না?

সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর একবার ঘুরতে ৩৬৫.২৫ দিনের একটু কম সময় লাগে। তাই চার বছর পর পর লিপ ইয়ার ধরলে প্রতি ৪০০ বছরে ৩ দিন অতিরিক্ত দিন ধরা হয়ে যায়। এ সমস্যার সমাধানে প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়, যেসব বছরে ০০ থাকবে সেসব বছর লিপ ইয়ার থেকে বাদ যাবে। কিন্তু এতেও সমাধান না হওয়ায় সিদ্ধান্ত হয়, যেসব বছরে ০০ থাকবে এবং ৪০০ দ্বারা বিভাজ্য নয়, তাদের লিপ ইয়ারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। যেমন– ১৯০০ সাল লিপ ইয়ার নয়, কিন্তু ২০০০ সাল লিপ ইয়ার।

এসএসএইচ