‘বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনামের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি একটি মিটিং হয়। ১৭ মিনিটের ওই মিটিংয়ে ট্রেনে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয় আগুন দেওয়ার জন্য। সে অনুযায়ী শুক্রবার রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়া হয়।’

গ্রেপ্তারের পর ট্রেনে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানান যুবদল নেতা কাজী মনসুর। জিজ্ঞাসাবাদে মনসুরের দেওয়া বক্তব্যের একটি ভিডিও গণমাধ্যমকে দিয়েছে ডিবি পুলিশ। সেখানে ট্রেনে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনার বর্ণনা রয়েছে।

রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ নবী উল্লাহ নবী ও যুবদল নেতা কাজী মনসুরসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ট্রেনের আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জন নিহত হয়েছেন। দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৮ জন। তাদের অবস্থা ঝুঁকিমুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

জিজ্ঞাসাবাদে কাজী মনসুর ডিবিকে জানান, তারা গতকাল একটি ভার্চুয়াল মিটিং করেন। মিটিংয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নসহ আরও অনেকে ছিলেন। প্রায় ১৭ মিনিট ধরে মিটিংটি চলে। মিটিংয়ে দুটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম সিদ্ধান্ত হলো ভোট কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ করা যাতে ভোটাররা ভয়ে সেখানে না আসেন। দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার। মিটিংয়ে যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন জিজ্ঞাসা করেন ট্রেনে আগুন দিতে পারবে কে? উপস্থিত অন্য কেউ কিছু না বললেও একজন রাজি হন।

মিটিংয়ে রবিউল ইসলাম নয়ন বলেন— কিশোরগঞ্জ থেকে আসা কোনো ট্রেন ঢাকায় ঢোকার পর কিংবা নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেনে আগুন দিতে হবে। এরপর রাজি হওয়া ব্যক্তিকে আগুনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এদিকে শনিবার (৬ জানুয়ারি) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের পরিকল্পনা হিসেবে বিএনপির নেতারা ভিডিও কনফারেন্স করেন। কনফারেন্সে প্রথমে আসেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দপ্তর সম্পাদক ও কাজী মনসুর।

‘তারা ভিডিও কনফারেন্সে এসে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে বিশেষ করে নরসিংদীর কাছে সুবিধাজনক স্থানে অগ্নিসংযোগ করার কথা বলেন। আরেকটি স্থানও তারা নির্ধারণ করেন। কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ লাইনের আপ-ডাউনে সুবিধাজনক স্থানে। সেখানে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন লাগিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরিকল্পনা করেন তারা।’

এমএসি/এসএম