হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেফতার করতে প্রায় দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসার আশপাশে অবস্থান নেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের আশঙ্কা ছিল মাদরাসার শিক্ষার্থী ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা বাধা দিতে পারেন। তবে তেমন কিছু হয়নি। পুলিশকে কোনো বাধা দেয়নি হেফাজত। খুব সহজেই মামুনুলকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে পুলিশ।

গ্রেফতারের পর তাকে প্রথমে আনা হয় তেজগাঁও বিভাগের ডিসি কার্যালয়ে। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় মোহাম্মদপুর থানায়।

মামুনুলকে গ্রেফতারের অভিযানে অংশ নেওয়া এক পুলিশ সদস্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, মধ্যরাত থেকেই মাদরাসার আশপাশে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। সকালের দিকে তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হারুন অর রশীদসহ অন্যান্যরা মাদরাসায় প্রবেশ করেন। ঢুকে মামুনুল হকের সঙ্গে কথা বলেন তারা। তাকে বলা হয়, ‘আপনাকে আমাদের সঙ্গে যেতে হবে’। মামুনুল সম্ভবত পুলিশকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কোন মামলায় কেন তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে? পুলিশ সদস্যরা তাকে এ বিষয়ে অবগত করেন এবং মামুনুলকে থানায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে বলেন।

যে ঘরে মামুনুলের সঙ্গে পুলিশ কথা বলে সেটির জানালা ও দরজা দিয়ে মাদরাসার অনেক শিক্ষার্থী ও হেফাজতের নেতাকর্মীরা পুলিশ ও মামুনুলের কথোপকথন দেখছিলেন। তবে তারা কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মামুনুলকে নিয়ে মাদরাসা থেকে বের হওয়ার ১০ মিনিট আগে ওয়াকিটকিতে গোটা তেজগাঁও ও মোহাম্মদপুর এলাকার পুলিশ সদস্যদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। মাদরাসার বাইরে পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা বাড়াতে বলা হয়।

মাদরাসায় প্রবেশ করেন মামুনুল হকের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ/ ছবি- ঢাকা পোস্ট

ঠিক দুপুর সাড়ে ১২টায় মাদরাসা থেকে মামুনুলকে নিয়ে বের হয় পুলিশ। তার হাতে হাতকড়া পরানো হয়নি, ডান হাতে ছিল একটি তসবিহ। তার সঙ্গে মাদ্রাসার ৩-৪ জন শিক্ষককে বের হতে দেখা যায়। স্বাভাবিকভাবেই হেঁটে বের হয়েছিলেন মামুনুল। শিক্ষকদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথা বলছিলেন। পাশে ছিলেন তেজগাঁয়ের ডিসি হারুন।

বের হওয়া ও গাড়িতে তোলার সময় হেলমেট ও শিল্ড নিয়ে প্রায় দুইশতাধিক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তবে হেফাজত কিংবা মাদরসার কেউই মামুনুলের গ্রেফতারে বাধা দেয়নি। পুলিশের কাছেও কৈফিয়ত চায়নি।

উপস্থিত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টের মতো পরিস্থিতি হতে পারে এমন আশঙ্কায় পুলিশ পূর্বপরিকল্পনা তৈরি করেছিল। তবে পুলিশের তৎপরতায় এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।

অভিযানের বিষয়ে ডিসি হারুন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা গ্রেফতারের সময় কোনো বাধার সম্মুখীন হইনি।
 
এআর/এইচকে