ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে টেলিফোন শিল্প সংস্থাকে (টেশিস) লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই। সেজন্য টেশিসের পরিচালককে অনুরোধ করবো, গত ৫ বছরের আয়-ব্যয় বিশ্লেষণ করে আগামী ৫ মাসের একটা পরিকল্পনা তৈরি করুন। এর ভিত্তিতে এই প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারবো।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা লিমিটেড (টেশিস) এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। আমাদের মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার অধিকার দিয়েছেন এবং সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তথ্য প্রযুক্তির ভিত্তি রচনা করে গেছেন। দেশে উৎপাদিত পণ্যের মাধ্যমে আমাদের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল টেলিফোন শিল্প সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আইসিটি সেক্টর থেকে ১.৯ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করছে। আইসিটি সেক্টরে আমরা ২০ লক্ষ্য তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান তৈরি করতে পেরেছি, দেশের ১৩ কোটি মানুষকে ইন্টারনেট সেবায় যুক্ত করতে পেরেছি, প্রায় ২৫০০ সরকারি সেবাকে ডিজিটাল মাধ্যমে জনগণের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দিতে পেরেছি।

পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে আগামী ৫ বছরে আমাদের জন্য বিশেষ ৩টি লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেগুলো হলো- রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও তরুণ প্রজন্মের জন্য স্মার্ট কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।

বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থাকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে চান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, আমি টেশিস-এর প্রত্যেকটা ফ্লোর, অপারেশন্স রুম, অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্ট ঘুরে দেখেছি। আমি বুঝতে চেয়েছি, আমাদের সম্পদ ও সক্ষমতা কতটুকু আছে, সমস্যা ও সংকট কতটুকু আছে এবং সেই যায়গা থেকে আমরা সম্ভাবনার দিকে কতটুকু এগিয়ে যেতে পারি। আমার কাছে মনে হয়েছে- আমাদের মেধা, শ্রম ও অর্থের অপচয় রোধ করে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করলে সেই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি টেশিসের কর্মকর্তারা দেশের ও মানুষের কষ্টার্জিত ট্যাক্সের টাকা অপচয় করবেন না বা অলাভজনক খাতে বিনিয়োগ করবেন না। আমরাও চাইবো একটা গর্বিত প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে, যারা দেশ ও মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারে। আমি যেটা উপলব্ধি করছি- আমাদের অপারেশন্স, ম্যানেজমেন্ট, প্রোডাকশন, মার্কেটিং ও আফটার সেলস সার্ভিসিং এর জায়গাগুলোতে উন্নতি করতে না পারলে আমরা প্রোডাক্ট সেলস বা বিনিয়োগ বাড়াতে পারবো না।

স্মার্ট টেশিসের স্মার্ট সম্পদ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে, যেমন- মূলধনের ঘাটতি পূরণ করতে হবে, টেশিসকে আধুনিকায়ন করতে হবে, প্ল্যান্টে আধুনিক ইকুইপমেন্ট লাগবে, স্মার্ট আইওটি ডিভাইস লাগবে, বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে, পণ্য বিপণন বৃদ্ধি করতে হবে এবং বেদখলকৃত সম্পদ উদ্ধার করতে হবে।

টেশিসের জন্য নতুন কোনো মূলধন সরকারের কাছে চাওয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের সম্পদের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, আমরা যদি সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে কাজ করি তাহলে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়ে তোলা এই প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারবো।

আরএইচটি/এমএসএ