পরিবেশ রক্ষায় স্পেশাল গ্রিন গার্ড তৈরি করার দাবি
হেরিটেজ, অভয়ারণ্য, নদী, সুন্দরবনসহ পরিবেশ রক্ষায় গ্রিন গার্ড (সবুজ পুলিশ) তৈরি করার দাবি জানিয়েছে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)। পরিবেশবাদী এই সংগঠনের দাবি, পুলিশ ফোর্সের ভেতরে বিশেষ ‘গ্রিন গার্ড’ (সবুজ পুলিশ) তৈরি করতে হবে। দেশের হেরিটেজ ও অভয়ারণ্য, নদী, সুন্দরবনসহ বিশেষ বিশেষ জায়গায় থাকবে গ্রিন গার্ড। কিন্তু এই গ্রিন গার্ড শুধু পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে তৈরি করলে হবে না। কারণ, পুলিশ ঘুষ নেয়। তাই নাগরিকদের মধ্যে থেকে সবুজ সৈনিকও তৈরি করতে হবে। তারা যৌথভাবে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করবে।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) প্রেস ক্লাবে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) আয়োজিত ‘হাতিমারা কৃত্রিম জলাশয় ও চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ দাবি তৈরি করার কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে ধরার সহ আহ্বায়ক শারমিন মুরশিদ চুনতি হাতিমারা কৃত্রিম হ্রদের বাঁধ কাটার ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, চুনতি অভয়ারণ্য উজাড়ের পেছনে সংসদ থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত সবাই জড়িত। বন বিভাগ সরকারি চাপকে ভয় পায়। তারা উচ্ছৃঙ্খল ব্যবসায়ীদের ভয় পায়। কিন্তু তারাই বনরক্ষার কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের উচ্ছৃঙ্খলতা বেপরোয়া। তারা বন দখল করে। তাদের সহযোগিতা করে সাধারণ মানুষের একটি অংশ।
ধরার সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। বন উজাড় করা বন্ধ করতে হবে। আমাদের স্থানীয়ভাবে শক্তিশালী হতে হবে। অক্সিজেনের ভাণ্ডার হলো গাছ। বনগুলোকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
চুনতি অভয়ারণ্য রক্ষায় সরকার জোরদার পদক্ষেপ নিয়েছে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের যথেষ্ট পদক্ষেপ থাকলে তো চুনতি অভয়ারণ্যের এমন অবস্থা কখনোই হতো না।
‘চুনতি রক্ষায় আমরা’ এর সমন্বয়ক সানজিদা রহমান একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সেখানে বলা হয়, চট্টগ্রামের বাঁশখালী, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া উপজেলা ও কক্সবাজারের চকরিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। প্রয়োজনাতিরিক্ত পাহাড় কেটে রেললাইন স্থাপন, বনের ভেতর অবৈধ বসতি প্রতিষ্ঠা, হাজার হাজার একর জমি বন্দোবস্ত ও বেআইনি কেনা-বেচা, পাহাড় কাটা, প্রাকৃতিক বন ও বন্যপ্রাণী নির্বিচারে নিধন করে অননুমোদিত ইটভাটায় সরবরাহ করা এবং সামাজিক বনায়নসহ বিভিন্ন প্রকল্পের নামে সেখানে নেতিবাচক প্রভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। এমনকি হাতির চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা ও হাতি মেরে ফেলার মতো ঘটনা ঘটেছে এবং বনের বিশাল এলাকাজুড়ে বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করার মতো গর্হিত কাজ চুনতিতে ঘটেছে।
সরকারকে জন-সম্পৃক্ত ও বিজ্ঞানভিত্তিক একটি সমন্বিত পরিকল্পনার স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি নির্মোহ এবং স্বচ্ছ বাস্তবায়নের মাধ্যমে চুনতি রক্ষায় দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন। সেইসঙ্গে ইতোমধ্যে ঘটে যাওয়া সংশ্লিষ্ট ঘটনা ও পদক্ষেপগুলোর ন্যায্য বিশ্লেষণ ও দোষীদের দ্রুত শাস্তিরও দাবি জানানো হয়।
ধরার সহ আহ্বায়ক শারমিন মুরশিদের সভাপতিত্বে ও ধরার সদস্য সচিব শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ধরার সহ আহ্বায়ক এম এস সিদ্দিকী, সদস্য আব্দুল করিম হিম, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
ওএফএ/এসএসএইচ