পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম বলেছেন, ধনী ও গরিবের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনতে সরকার মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বহুমাত্রিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির (জাপা) মো. মুজিবুল হকের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সংসদ অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আয় বৈষম্য বা ধনী-গরিবের ব্যবধান কমিয়ে আনতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বহুমাত্রিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের গত ১৫ বছরের শাসনামলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছে। 

তিনি বলেন, বৈশ্বিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সত্ত্বেও জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০১৯-২০ অর্থ-বছরে ৩.৪৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২১-২২ অর্থ-বছরের ৭.১০ শতাংশ এ উন্নীত হয়েছে। জাতীয় দারিদ্র্যের হার ২০১৬ সালের ২৪.৩ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ১৮-৭ শতাংশে নেমে এসেছে। চরম দারিদ্র্যের হারও ২০১৬ সালের ১২.৯ শতাংশ থেকে অর্ধেকের বেশি হ্রাস পেয়ে ২০২২ সালে ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৫ সাল নাগাদ চরম দারিদ্র্য হ্রাসের যে লক্ষ্যমাত্রা (৭.৪ শতাংশ), তা ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে।

আব্দুস সালাম বলেন, উচ্চ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও উল্লেখযোগ্য হারে দারিদ্র্য কমলেও আয়-বৈষম্য হ্রাস সময়সাপেক্ষ বিষয়। বিবিএসের সর্বশেষ খানা আয়-ব্যয় জরিপ অনুসারে, ২০২২ সালে আয়-বৈষম্য জিনি সহগের মান ০-৪৯৯। তবে ভোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশে বৈষম্য ০:৩০-০.৩২ এ স্থিত হয়ে আছে, যা আয় বৈষম্যের প্রভাব লাঘব করেছে। 

মন্ত্রী বলেন, অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন যে, ভোগ ব্যয়-বৈষম্য পরিমাপে অধিকতর নির্ভরযোগ্য। আয়-বৈষম্য মূলত বাজার অর্থনীতিরই একটি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য, যার মূলে রয়েছে সম্পদ ও মানব পুঁজির অসম বণ্টন। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্থাৎ প্রবৃদ্ধির সুবিধা সব জনগোষ্ঠীর মাঝে সমানভাবে বণ্টন নিশ্চিত করা গেলে আয়-বৈষম্য কমিয়ে আনা সম্ভব। সরকার দারিদ্র্য ও আয়-বৈষম্য দূরীকরণে যথেষ্ট আন্তরিক। সরকারের সবগুলো দীর্ঘ ও মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা উন্নয়ন কৌশলের ভিত্তিমূলে রয়েছে অন্তর্ভুক্ত অর্থনৈতিক উন্নয়ন।

এসআর/কেএ