বেইলি রোডের আগুনের মতো হৃদয়বিদারক ঘটনা প্রতিরোধে বিজ্ঞানসম্মত সতর্কতা প্রয়োজন বলে মনে করে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)। সংগঠনটি বলছে, গ্রিন কোজি কটেজে আগুনে এ পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অনেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। 

পবা এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছে। সেই সঙ্গে আমরা এই দুর্ঘটনায় যেসব অগ্নিনির্বাপণ কর্মী, ডিএমপির সদস্য, ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটের সদস্যসহ অন্য যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে মানুষকে সেবা দিয়েছে, রক্ষা করেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করছে।

রোববার (৩ মার্চ) পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) কার্যকরী সভাপতি ডা. লেলিন চৌধুরীর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই। একইসঙ্গে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তরের সংশ্লিষ্টদেরকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য সরকারকে আহ্বান জানাই। ঢাকার শহরের বনানী, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন জায়গায় অনেক বহুতল ভবনের বিভিন্ন তলায় রেস্তোরাঁসহ নানা বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড চলছে। সেসব ভবনের অগ্নিনিরাপত্তাসহ জননিরাপত্তার অনেক বিধিবিধান মানা হচ্ছে না। এসব ভবনে রান্নাঘর, এসি স্থাপনের ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের বিধান মানা হয়েছে কি না তা নিরীক্ষা করা জরুরি। অনেক রেস্টুরেন্টের ভেতরে তৈরি হয়েছে ধূমপানের স্থান, যা নগরের রেস্টুরেন্টগুলোকে অগ্নিবোমার ডিপোতে পরিণত করছে। রেস্টুরেন্ট মালিকদের এই ধরনের দায়িত্বহীন ও বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

পবা দীর্ঘদিন ধরে নগরে এ বিভিন্ন অগ্নি দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য সচেতনতা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু বরাবরই মতোই পরিকল্পিত ও ধারাবাহিক আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এ সকল দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না। পবা মনে করে এ জাতীয় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে রাজউক, ফায়ার সার্ভিস, সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন (২০০৩) ও অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ বিধিমালা (২০১৪) অনুসারে রেস্টুরেন্টসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমুহকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর হতে অনুমোদন নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এর অন্য কিছু হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

পবার পক্ষ হতে সিটি কর্পোরেশন, রাজউক, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিস্ট প্রতিষ্ঠানসমুহকে অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে ৬ মাসের একটি পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে। এ পরিকল্পনার আওতায় প্রথমেই যেসব প্রতিষ্ঠান আইন লঙ্ঘন করে কাজ করছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। আইনভঙ্গকারী প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে অনলাইন অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা (জিআরএস)-এ অভিযোগ দিতে উৎসাহিত করতে হবে। আমরা আশা করি এ দুর্ঘটনাই হবে এ মহানগরের শেষ অগ্নি দুর্ঘটনা।

/এমএইচএন/এমএ