নিজের ঘর থেকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) বার্তা দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।  

সোমবার (৪ মার্চ) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের সপ্তম কার্য-অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

অনেক সময় ডিসিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকে। সেক্ষেত্রে তাদের প্রতি আপনাদের বার্তা কি ছিল- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন,  'ডিসিদের আমরা বলেছি আপনাদের অফিস দুর্নীতিমুক্ত, আপনি নিজে দুর্নীতিমুক্ত কিনা, আগে নিজের কাছে প্রশ্ন করেন; এ কথা বলা হয়েছে। যদি আপনার অফিস দুর্নীতিমুক্ত না হয়, নিজের অফিসকে দুর্নীতিমুক্ত করুন।'

'শুধু নিজের অফিস না, জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে আপনাদের অধীনে যেসব অফিস আছে, ওগুলো দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা করুন। নিজের ঘর থেকে দুর্নীতিমুক্ত করুন, তারপর অন্যান্য দুর্নীতিগুলোর খোঁজখবর রাখেন- এই হলো বার্তা।'

ডিসিদের বিরুদ্ধে যদি কোনোঅভিযোগ আসে অবশ্যই সেটা আমলে নেওয়া হয় বলেও এসময় দাবি করেন তিনি। 

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, 'আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করি। প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হলে আমরা মামলা করে থাকি।'

মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, 'বলা হয়ে থাকে জেলা প্রশাসকরা সংশ্লিষ্ট জেলায় সরকারের প্রতিনিধি। তারা ৩০ থেকে ৩৫টি কমিটির সভাপতি এবং জেলার সব কার্যক্রম সম্পর্কে তারা সবসময় অবহিত থাকেন। এজন্য কোথাও অনিয়ম দুর্নীতি হলে তাদের কাছে এই তথ্যগুলো সবার আগে আসার কথা।'

তিনি বলেন, 'আমরা জেলা প্রশাসককে বলেছি, এই ব্যাপারে আপনারা একটু সচেতন থাকবেন। কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে, কোথায় অনিয়ম হচ্ছে, এগুলো আপনাদের কাছে আসে বা কীভাবে সব তথ্য আসতে পারে সেই একটা মেকানিজম তৈরি করে আপনারা তথ্য সংগ্রহ করবেন এবং তথ্য সংগ্রহ করে আপনারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।'

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, 'যেগুলো দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানোর প্রয়োজন ওগুলো পাঠিয়ে দেবেন। আর যেগুলো একান্ত বিভিন্ন কারণে যদি আপনাদের সরাসরি পাঠাতে সমস্যা হয় জেলা প্রশাসকরা প্রতি ১৫ দিনে একবার একটি গোপনীয় প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠান। ওই গোপনীয়ভাবে তারা যেন ওই প্রতিবেদনে পাঠিয়ে দেয়, তাতে করে আমরাও জেনে যাব। অনেক সময় সরাসরি পাঠানোতে অন্তরায় থাকে। তাহলে গোপনীয় প্রতিবেদনে পাঠাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে। তিনি তখন পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।'

তিনি আরও বলেন, 'দুর্নীতি দমন কমিশনের দুটি কাজ-প্রতিরোধ এবং প্রতিকার। আমরা তদন্ত অনুসন্ধান করে যদি মামলা হয় মামলা করি, বিচারের জন্য আদালতে সোপর্দ করি। আর প্রতিরোধের ব্যাপারে আমাদের জেলা প্রশাসকদের সাহায্য ছাড়া এ কার্যক্রমটি সুচারুভাবে করতে পারি না। দুর্নীতি যেন না হয় এজন্য প্রচার-প্রচারণার আমাদের যে কার্যক্রম আছে, সেগুলো যাতে সরাসরি আমাদের সহায়তা করে, আমাদের জেলা এবং বিভাগীয় কর্মচারী যারা আছে তাদেরকে যাতে সার্বিক সহায়তা করে।'

অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী জেলায় দুদকের লোকবলের ঘাটতির কথা জানিয়ে এসময় তিনি বলেন, 'তারা (ডিসি) যেন যেকোনো প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমে আমাদের লোকজন যখন যাবে তারা বিভিন্নভাবে লোকবল বা বিভিন্নভাবে যেন আমাদের সহায়তা করে, আমরা এই অনুরোধ করেছি।'

এসএইচআর/জেডএস