বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ন্যায়সঙ্গত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই উন্নয়নের মতো বৃহত্তর লক্ষ্য অর্জনের জন্য লিঙ্গ সমতা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। লিঙ্গ সমতা শক্তিশালী গণতন্ত্রের একটি অপরিহার্য পূর্বশর্ত। বাংলাদেশের সংবিধান সব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) ফ্রান্সের প্যারিসে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি কর্তৃক আয়োজিত ‘উইমেন স্পিকার্স সামিট’ শীর্ষক সম্মেলনে স্পিকার এসব কথা বলেন। এর আগে, এলিসি প্রাসাদে আজ সকালে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের সঙ্গে সারাবিশ্বের ২৫ জন নারী স্পিকারের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে ফ্রান্সের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট ইয়ায়েল ব্রাউন পিভেট সামিটের উদ্বোধন করেন। এ সময় ‘এডুকেশন ইন ইক্যুয়ালিটি, হেলথ অ্যান্ড ফাইট এগেইনস্ট ভায়োলেন্স টুওয়ার্ডস উইমেন’ বিষয়ে প্রথম এবং ‘জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি, প্রায়োরিটি অ্যান্ড ইমপাওয়ারমেন্ট ইন পলিটিকিস, ফিমেল রোল মডেল’ বিষয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান রাষ্ট্র ও গণজীবনের সব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে। জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য ৫০টি সংরক্ষিত আসন রয়েছে এবং সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমেও নারীরা সংসদ সদস্য হতে পারেন।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোতে শতকরা তেত্রিশ ভাগ নারী থাকার স্থলে বর্তমানে আছে শতকরা ২২ থেকে ২৪ ভাগ। প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও বেশি সংখ্যায় নারীদের মনোনয়ন দিতে হবে। এ বিষয়ে উপযুক্ত আইন ও নীতি গ্রহণ করা আবশ্যক।

স্পিকার বলেন, নারী ক্ষমতায়নে লিঙ্গ সংবেদনশীল বাজেটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক ও লজিস্টিক সহায়তার পাশাপাশি মার্কেটে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। 

তিনি বলেন, নারীদের আইসিটি সেক্টরে অভ্যস্ত করতে প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ও নিশ্চিত করতে হবে। 

স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের কারণে দেশে নারী শিক্ষার প্রসারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীর অনুপাতে সমতা রয়েছে। বর্তমানে উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত হতেও নারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। নারী শিক্ষাকে অগ্রসর করতে বিভিন্ন ধরনের নীতি গ্রহণের পাশাপাশি বিনামূল্যে বই ও শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে, যা বাল্যবিবাহ রোধে ভূমিকা রাখছে।

ফ্রান্স, মেক্সিকো, মাদাগাস্কার, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কিরিবাতি, স্পেন, বেলজিয়াম, ইউক্রেন, বাহামাস, মালাও, মোজাম্বিক, রুয়ান্ডা, তানজানিয়া, জার্মানিসহ সারাবিশ্বের ২৫ জন নারী স্পিকার এ সামিটে অংশগ্রহণ করেন।

এসআর/এমএ