মাত্র তিন থেকে চার দিন আগে ছোট সাইজের একটি আনারস ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রমজান মাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আনারসের দাম বেড়ে গেছে দ্বিগুণেরও বেশি। মাঝারি সাইজের একটি আনারস ধরলেই এখন গুনতে হচ্ছে ন্যূনতম ৭০ টাকা!

বুধবার (১৩ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুবই ছোট আকারের আনারস বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। মাঝারি সাইজের আনারসের দাম রাখা হচ্ছে ৭০ টাকা। একটু বড় সাইজের আনারস বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।  

বিক্রেতারা বলছেন, দুই দিন আগেও আনারসের দাম কম ছিল। রমজান উপলক্ষ্যে হঠাৎ করেই পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে গেছে। সে কারণে খুচরা বাজারেও দাম বেশি রাখতে হচ্ছে। 

ক্রেতারা বলছেন, বাজারের ওপর কারো নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে অন্য পণ্যের মতো আনারসের দামও রাতারাতি বেড়ে গেছে। রোজার আগে ছোট সাইজের আনারস ৩০-৪০ টাকায় কেনা গেছে। আর এখন ৫০-৬০ টাকার নিচে কোনো আনারস নেই।

রাজধানীর গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডে একটি ভ্যানে বিভিন্ন সাইজের আনারস বিক্রি করছিলেন ভাসমান বিক্রেতা কামাল উদ্দিন। তিনি আনারসের সর্বনিম্ন দাম চাচ্ছেন ৭০ টাকা, আর সর্বোচ্চ ১২০ টাকা।

তিনি বলেন, আমি প্রতি ১০০ পিস আনারস কিনে এনেছি ৬০০০ টাকা দিয়ে। গড়ে ৬০ টাকা পড়েছে। এখানে যেমন বড় আনারস আছে, তেমনি ছোটও আছে। আমি তিনটি ভাগে আনারস বিক্রি করছি। যেগুলো একটু বড় সেগুলো ১২০ টাকায়, মাঝারি সাইজ ৯০ টাকায় এবং তুলনামূলক ছোট আনারস ৭০ টাকায় বিক্রি করছি। খুব বেশি লাভ করা যাচ্ছে না।

মহাখালীতে ফলের দোকানি খোরশেদ আলমের দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে আনারস। তিনি বলেন, কারওয়ান বাজার থেকে আমরা পাইকারি দরে কিনে আনি। সেখানে যে মাল রোজার আগে ১০০ পিস কিনেছি পাঁচ হাজার টাকায়, সেটি এখন কিনতে হচ্ছে ছয় থেকে সাত হাজার টাকায়। রোজা শুরু হলে ফলের চাহিদা বেড়ে যায়, এজন্য আনারসের দামও বেড়েছে।

তিনি বলেন, বাজারে পার্বত্যাঞ্চলের আনারস আগাম এসেছে। এগুলো দেখতে তুলনামূলক ছোট আর খুব মিষ্টি। মধুপুর এলাকার বড় আনারসগুলোকে বলা হয় ক্যালেন্ডার। পার্বত্যাঞ্চলের আনারসের চাহিদা বেশি। রমজান মাস শুরু হওয়ার পর দুই অঞ্চলের আনারসের দামই বেড়েছে।

মহাখালী ওয়ারলেস এলাকায় আনারস কিনছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী রাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে রমজান মাস এলে সবকিছুর দাম কমিয়ে দেওয়া হয়। অথচ আমাদের দেশে বাড়িয়ে দেওয়া হয়। যারা এভাবে বাড়িয়ে দেয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। 

পাশের এলাকা টি অ্যান্ড টি মাঠ সংলগ্ন কড়াইল বস্তির বাসিন্দা মোজাম্মেল হক বলেন, কাজ শেষে ইফতার সামগ্রী কিনে বাসায় যাচ্ছি। সব জিনিসের দাম বাড়তি, অল্প রোজগারে সংসার চালানোই কঠিন। আগে ছোট দেখে আনারস একটা নিতাম। এখন দাম অনেক বেশি, কেনার সামর্থ্য নেই। গোটা একটা আনারস না কিনে ২০ টাকার টুকরো আনারস নিয়ে যাচ্ছি। দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাব!

এএসএস/কেএ