ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ঈদের পরে কারওয়ান বাজারে ডিএনসিসির পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা হবে। কারওয়ান বাজারের এই কাঁচাবাজারের ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় এটি ধসে পড়তে পারে। এ কারণে বহু মানুষের জীবন হুমকিতে রয়েছে।

সোমবার (১৮ মার্চ) এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আতিকুল ইসলাম বলেন, কারওয়ান বাজারে পাইকারি কাঁচাবাজারের এই ব্যবসায়ীদের গাবতলিতে ডিএনসিসির পাইকারি কাঁচাবাজারে স্থানান্তর করা হবে। দ্রুতই গাবতলীতে বরাদ্দ দেওয়া হবে। বরাদ্দ দেওয়া হলে আপনারা যারা আসবেন না তাদের দায় নিজেদের নিতে হবে। বরাদ্দ পাওয়ার পরে কেউ না আসলে সেটি নিয়ম অনুযায়ী অন্যজনকে বরাদ্দ দিয়ে দেওয়া হবে।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ঢাকার মিরপুর, উত্তরা, মোহাম্মদপুর একদিনে গড়ে ওঠেনি। সময়ের পরিক্রমায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট নেতৃত্বে ঢাকার উন্নয়ন প্রসারিত হচ্ছে। কারওয়ান বাজার এখন ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে। একটি সিটির প্রাণকেন্দ্রে পাইকারি কাঁচাবাজার থাকতে পারে না। ট্রাক আসছে, ট্রাক যাচ্ছে, রাস্তা বন্ধ করে মালামাল নামানো হচ্ছে। কোন ডিসিপ্লিন নেই। রাস্তায় প্রচণ্ড ট্র্যাফিক জ্যামের সৃষ্টি হয়। কারওয়ান বাজারটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, কোনো নিরাপত্তা নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ স্মার্ট শহরের কেন্দ্রে ঝুঁকিপূর্ণ এই পাইকারি কাঁচাবাজার থাকতে পারবে না।

মেয়র বলেন, ঢাকা শহরের ওপর দিয়ে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নিচ দিয়ে সুন্দর রাস্তা হয়ে গেছে। সবার সহযোগিতা নিয়ে কারওয়ান বাজারকে সুন্দর করে সাজাতে চাই। আমরা একটি কমিটি করে দিয়েছিলাম। পর্যায়ক্রমে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীদের স্থানান্তর করা হবে। গাবতলীতে যে কাঁচাবাজারটি রয়েছে সেটি পরিকল্পিতভাবে সব কমপ্লায়েন্স মেইনটেইন করে নির্মাণ করা হয়েছে। অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এই ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ড ঘটলে এখানে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ। ৪টি বহির্গমন পথ রয়েছে। ট্রাক থেকে মালামাল আনলোড করার যথেষ্ট ব্যবস্থা রাখা আছে। আপনাদের জন্য বিশ্রামাগারও করা হয়েছে। আরও যা যা সুবিধা দরকার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে নদী পথেও মালামাল পরিবহণ করা যাবে। পাশ দিয়ে আট লেনের সড়ক হচ্ছে। মার্কেট থেকে মেইন রোডের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দিচ্ছি। ঈদের আগেই এটি সম্পন্ন করা হবে।

মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রথম ধাপে কারওয়ান বাজার আড়ত মার্কেটের ১ম তলার ৪০০ বর্গফুটের ৬২টি দোকান এবং ২য় তলার ১৭০ বর্গফুটের ১১৪টি দোকান অর্থাৎ মোট ১৭৬টি দোকান স্থানান্তর করা হবে। এছাড়াও কারওয়ান বাজারে সম্পত্তি বিভাগ কর্তৃক বরাদ্দকৃত ১৮০টি টিনশেড দোকান আমিনবাজারে পাইকারি কাঁচাবাজারের আশপাশের উন্মুক্ত স্থানে স্থানান্তরের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বীর আহমেদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান প্রমুখ।

এএসএস/এমএ