রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এবং ডিটেল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশের মানুষ সিংগাপুর, হংকংয়ের মতো বহুতল ভবন বানাতে আগ্রহী, অথচ ভবনের আশেপাশে পর্যাপ্ত জায়গা ছাড়তে রাজি নন তারা।

শুক্রবার (২২ মার্চ) অনলাইনে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) আয়োজিত ‌‘গাজীপুরের কালিয়াকৈর, ঢাকার বেইলি রোডসহ নগরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা: নগর পরিকল্পনা ও নীতি কৌশলের দায়’ শীর্ষক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিশ্লেষণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, সে সব শহরে ব্লকভিত্তিক উন্নয়নের মাধ্যমে অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করেই বহুতল ভবন বানানো হয়, আর আমরা সরু গলির ভেতরে এ ধরনের ভবন বানিয়ে শহরকে অনিরাপদ করে ফেলেছি। নগরকে নিরাপদ করতে রাজউকের যেমন দায় আছে, পেশাজীবীদেরও দায় আছে।

অনুষ্ঠানে আইপিডির সভাপতি অধ্যাপক আদিল বলেন, দেশের সকল নগর এলাকার মহা-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও যথাযথ অনুমোদনের মাধ্যমে পরিকল্পিত ভূমি ব্যবহার, নগরায়ন ও শিল্পায়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে অগ্নিঝুঁকি কমানো এবং জীবনের নিরাপত্তা বাড়ানো সম্ভব। বিপদজনক মিশ্র ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করা এবং নগর সংস্থাসমূহের সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে মিশ্র ব্যবহার এর নীতিমালা তৈরি করা দরকার। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উলম্ব বা ভার্টিক্যাল মিশ্র ব্যবহার না করে আনুভূমিক (হরাইজন্টাল) মিশ্র ব্যবহার নীতি গ্রহণ করা। অনুমোদনহীন এবং ভূমি ব্যবহার নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটিয়ে শিল্প কারখানা স্থাপনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শিল্প জোনে কারখানা স্থাপন নিশ্চিত করার যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে।

আইপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদন অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ ও অতিঝুঁকিপূর্ণ ভবন শনাক্ত করা হলেও তা সিলগালা বা খালি করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না। বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে দুইটি সিঁড়ি ও বহির্গমন পথ থাকার কথা কিন্তু ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় ১০তালার উঁচু ভবনকে হাই-রাইজ হিসাবে বিবেচনা করায় অগ্নিঝুঁকি বৃদ্ধি বাড়ছে।

আইপিডির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুকে মাথায় রেখেই নগর পরিকল্পনা ও  ভবনের নকশা করতে হবে। নগরকে নিরাপদ করতে অসঙ্গতিপূর্ণ মিশ্র ব্যবহার পরিহার করতে হবে। বিএনবিসি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি (বিবিআরএ) গঠন করতে হবে।

আইপিডির পরিচালক ড. চৌধুরী মো. জাবের সাদেক বলেন, অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসকে ভবন সিলগালা করে দেওয়ার ক্ষমতা দিতে হবে। একই সঙ্গে ঢাকার বাইরে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

এএসএস/এসকেডি